মার্কিন বিমানবাহিনীর ১ম হিজাবি অফিসার মায়সা

ক্যাপ্টেন মায়সা উজা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর প্রথম হিজাবি কর্মকর্তা। ২৯ বছর বয়সী এ নারী গর্বের সঙ্গে হিজাব পরেন। ইউনিফর্ম হিসেবে হিজাব পরে বিমানবাহিনীর দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ইউনিফর্ম হিসেবে তিনি হিজাবের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মীয় পোশাক পরার অধিকারও নিশ্চিত করেছেন। তবে এ পর্যায়ে আসতে তাকে নানা কাঠখড় ‍পোড়াতে হয়েছে। পাড়ি দিতে হয়েছে বহু বন্ধুর পথ।

আমেরিকার এয়ার ফোর্স টাইমস ও এবিসি অ্যাকশন নিউজে ০৫ জুলাই (বৃহস্পতিবার) প্রকাশিত প্রতিবেদনে তার দায়িত্ব ও হিজাব পরার সংগ্রামের নানা কিছু আলোচিত হয়েছে।

জানা গেছে, হিজাব পরার জন্য ২০১৮ সালে তাকে আইনি অনুমোদন নিতে হয়। বর্তমানে তিনি বিমানবাহিনীর আইন বিষয়ে জজ অ্যাডভোকেট জেনারেল (জেএজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

যেভাবে শুরু হয় হিজাব পরার প্রচেষ্টা

সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শুরুর দিনগুলোর কথা স্মরণ করে মায়সা বলেন, অফিসার প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করা পর্যন্ত আমি ধর্মীয় পোশাক পরতে পারব না বলে জানানো হয়। তখন আমার মনে হয়েছিল যে আমাকে ধর্মীয় অনুশাসন চর্চা ও দেশের সেবার মধ্যে কোনো একটিকে নির্বাচন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রথমে নিয়োগ পেয়ে আমি কোনো মুসলিম নারীকে ইউনিফর্ম হিসেবে হিজাব পরতে দেখিনি।

মায়সা আরও বলেন, আমি বিমানবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলাম— দেশের স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে। কিন্তু পরবর্তীতে মনে হয়েছে যে, আমার ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এরপর আমি আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন (এসিএলইউ) ও আইন বিষয়ক  বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করি।

মায়সার সুবিধার্থে নীতিমালায় বদল

হিজাব পরার প্রবল ইচ্ছে ছিল মায়সা উজার। এই প্রচেষ্টায় তিনি সফল হয়েছেন। উপরন্তু হিজাব পরার ধর্মীয় অধিকার লাভের পাশাপাশি সবার ধর্মীয় পোশাকের অধিকার সুনিশ্চিত করতে এ বছর ইউনিফর্ম বিষয়ক নীতিমালায় পরিবর্তন করা হয়। এখন থেকে বিমানবাহিনীর যেকোনো নারী ও পুরুষ কর্মকর্তা ইউনিফর্ম হিসেবে নিজের ধর্মীয় পোশাক পরার আবেদন করতে পারবেন।

মায়সা উজা বিমানবাহিনী যোগ দিয়েছেন তার বাবা-মায়ের অনুপ্রেণায়। জেএজি অফিসার উজা জন্মগতভাবে একজন লেবানিজ-আমেরিকান। ১৯৮০ সালে তার বাবা-মা যুক্তরাষ্ট্রের পাড়ি জমান। তখন তারা ছিলেন, পুরোপুরি রিক্তহস্ত। গায়ের পোশাক ছাড়া আর কিছু ছিল না।

উজা একজন নারী অধিকারকর্মী হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছেন। মায়সা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে চান। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি চাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সবাইকে সহায়তা করতে, যেন সবার আওয়াজ উঁচু হয়।