যে ৫ আমলে সম্পদ বাড়ে
সম্পদ বাড়ুক— এটা কম-বেশ সবাই চায়। জীবন-জীবিকার অনিবার্য তাগিদেই সাধারণত এমনটা হয়। প্রয়োজনবোধে মানুষ তখন অনেক কিছু করে। চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্ষেত-খামার ও নানা কাজ-কর্ম। এমনকি সম্পদ বৃদ্ধির আশায় মানুষ দূরে চলে যায়। পরিবার ছেড়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হয়। এক দেশ থেকে ভিন দেশে পাড়ি জমায়।
সম্পদ বাড়ার জন্য প্রতিটি দেশের সরকার, মানবাধিকার সংস্থা ও বিভিন্ন এনজিও নানা উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। মানবতার ধর্ম ইসলামও এসব উদ্যোগের যুক্তি অস্বীকার করে না। তবে এসবের সঙ্গে ইসলাম আরও কিছু অভ্যন্তরীণ উপায় ও আমল যোগ করে দিয়েছে। এতে সম্পদে বরকতের ছোঁয়া লাগে। প্রাচুর্যের ফল্গুধারা বয়ে যায়।
মূলত হালাল পথে সম্পদ বাড়ানোর বহু উপায় ইসলাম বাতলে দিয়েছে। নিম্নে সেগুলোর ৫টি নিয়ে আলোচনা করা হলো। ধারাবাহিকভাবে আরও আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
বিজ্ঞাপন
এক. তাকওয়া অবলম্বন করা
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার পথ করে দেবেন। আর তাকে তার ধারণাতীত উৎস থেকে রিজিক দান করবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর নির্ভর করে, তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেনই। আল্লাহ সব কিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা।’ (সুরা তালাক, আয়াত : ২-৩)
দুই. আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
নুহ (আ.)-এর জবাবে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আমি বললাম, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তিনি তো মহাক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তিনি তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান ও প্রবাহিত করবেন নদী-নালা।’ (সুরা নুহ, আয়াত : ১০-১২)
তিন. তাওবা ও ইস্তিগফার করা
তাওবার অর্থ হচ্ছে পাপকে ঘৃণিত কর্মজ্ঞান করে বর্জন করা। নিজ ভুলের জন্য লজ্জিত হওয়া এবং ভবিষ্যতে তা না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। হুদ (আ.)-এর ভাষায় কোরআনে এসেছে, ‘হে আমার জাতি, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, অতঃপর তাঁর দিকে নিবিষ্ট হও। তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টিবর্ষণ করবেন এবং তোমাদের শক্তি বর্ধিত করে দেবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৫২)
চার. আল্লাহর ওপর ভরসা করা
শুধু আল্লাহর তাওয়াক্কুল। আর মহান মালিকের ওপর আন্তরিক নির্ভরতা ও ভরসার নামই তাওয়াক্কুল। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা যদি আল্লাহর ওপর যথাযথ ভরসা করো, তাহলে তোমাদের জীবিকা দেওয়া হবে সেভাবে, যেভাবে পাখি রিজিকপ্রাপ্ত হয়। পাখি সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় বের হয় এবং পেট পূরণ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফেরে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৪৪)
পাঁচ. যথাযথভাবে আল্লাহর ইবাদত করা
ইবাদতের মাধ্যমে রিজিকে বরকত আসে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি তারা তাওরাত ও ইঞ্জিলের এবং যে কিতাব (কোরআন) তাদের রবের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তার যথারীতি আমলকারী হতো, তাহলে তারা ওপর (আকাশ) থেকে এবং পায়ের নিচ (জমিন) থেকে প্রাচুর্যের সঙ্গে ভক্ষণ করত। তাদের একদল তো সরল পথের পথিক; আর তাদের বেশির ভাগ এমন যে তাদের কার্যকলাপ অতি জঘন্য।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৬৬)