কোরবানি যাদের ওপর ওয়াজিব
কোরবানি পবিত্র ঈদুল আজহার দিনের সবচেয়ে বড় আমল। মুসলিম উম্মাহর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এছাড়াও এটি ইসলামের প্রতীকী বিধানাবলির অন্যতম। এতে গরিব-দুঃখী ও পাড়া-প্রতিবেশীর জন্য মেহমানদারি-আপ্যায়নের ব্যবস্থা হয়। আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রতি বছর কোরবানি করতেন।
কোরবানি আল্লাহর জন্য করা হয়। এতে শর্তহীন আনুগত্যের শিক্ষা রয়েছে। আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য। এতে আল্লাহর ভালোবাসায় নিজের সব চাহিদা ও যুক্তি কোরবানি করার শিক্ষা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুল! আপনি বলুন, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ বিশ্ব জাহানের পালনকর্তা আল্লাহর জন্য উৎসর্গিত।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১৬২)
কোরবানি ওয়াজিব কাদের ওপর?
জাকাত ও কোরবানির নিসাব একই। ফলে যাদের ওপর জাকাত ওয়াজিব, তাদের ওপর কোরবানিও ওয়াজিব।
প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী— যে কোরবানির দিনগুলোতে সাড়ে সাত ভরি সোনা, সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা ওই পরিমাণ রুপার সমমূল্যের নগদ অর্থ অথবা বর্তমানে বসবাস ও খাবারের প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজনাতিরিক্ত বাড়ি, ব্যাবসায়িক পণ্য ও প্রয়োজনাতিরিক্ত অন্য আসবাবপত্রের মালিক হবে, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। (রাদ্দুল মুহতার : ৬/৬৫; মাবসুতে সারাখসি ১২/৮)
আর সোনা বা রুপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু প্রয়োজনাতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায়, তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।
যেমন কারো কাছে কিছু স্বর্ণ ও কিছু টাকা আছে, যা সর্বমোট সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার মূল্যের সমান, তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। (রদ্দুল মুহতার : ৫/২১৯)
কোরবানির নিসাবের লক্ষণীয় বিষয়
কোরবানির নিসাব পূর্ণ হওয়ার জন্য জাকাতের মতো সম্পদের বর্ষ অতিক্রম হওয়া শর্ত নয়, শুধু কোরবানির তিন দিন নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়াই যথেষ্ট। এমনকি ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণেও নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে গেলে কোরবানি ওয়াজিব হবে। (বাদায়েউস সানায়ে : ৫/৬২)
একান্নভুক্ত পরিবারের মধ্যে একাধিক ব্যক্তির কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে তাদের প্রত্যেকের ওপর ভিন্ন ভিন্ন কোরবানি ওয়াজিব। (কিফায়াতুল মুফতি : ৮/১৭৮)