বাবার বন্ধুর সঙ্গে যেমন আচরণ করতে বলেছেন নবীজি
বাবাকে ভালোবাসতে ও সম্মান জানাতে ইসলাম খুবই গুরুত্ব দিয়েছে। বাবার অনুপস্থিতে বাবার বন্ধুকে ভালোবাসতে বলেছে। তাদের সম্মান জানাতে আদেশ দিয়েছে। মহানবী (সা.)-এর যুগে এক সাহাবি পিতা মারা যাওয়ার পর রাসুল (সা.) এর কাছে এসে জানতে চেয়েছিলেন; পিতার ওপর তার কোনো দায়িত্ব আছে কি-না? তখন আল্লাহর রাসুল তাকে পিতার বন্ধুদের সঙ্গে ভালো ব্যবহারের আদেশ দেন।
বাবার বন্ধুদের সম্মান জানানো মানে পিতাকে সম্মান জানানো। তারা বাবার জীবনে সুখ-দুঃখের সঙ্গী। তাদের ভালোবাসার মধ্যেই পিতার ভালোবাসা নিহিত। আবু উসাইদ (রা.) বলেন, ‘একবার আমরা রাসুল (সা.)-এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় বনি সালামা গোত্রের এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! পিতা-মাতার মৃত্যুর পরও তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার দায়িত্ব আমার ওপর রয়েছে কি? তা কীভাবে করতে হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাদের জন্য দোয়া করা। তাদের গুনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করা, তাদের অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করা, তাদের আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা। তাদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৪)
বাবার বন্ধুর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলে আল্লাহ তাআলা খুশি হন। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘সৎ কাজগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় সৎকাজ হলো- কোনো ব্যক্তি তার পিতার বন্ধুদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা।’ (মুসলিম শরিফ)
বিজ্ঞাপন
পিতার বন্ধুদের ভালোবাসার শিক্ষা ইসলাম শিকড় থেকেই দিয়েছে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ সাহাবায়ে কিরাম পিতার বন্ধুকে সম্মান জানিয়েছেন। চাই সে মুসলমান হোক কিংবা অমুসলিম। আব্দুল্লাহ ইবনে দিনার আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন- জনৈক বেদুইন তার সঙ্গে মক্কার পথে মিলিত হন।
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) তাকে সালাম করেন এবং যে গাধার পিঠে তিনি আরোহিত ছিলেন সেটাতে তাকেও তুলে নিলেন। তিনি নিজের মাথার পাগড়িটা তাকে দিয়ে দিলেন। ইবনে দিনার বলেন- আমরা তাকে বললাম, আল্লাহ আপনাকে কল্যাণ দান করুক। বেদুইনরা তো অল্প কিছু পেলেই সন্তুষ্ট হয়ে যায়। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) তখন বলেন, ‘এই ব্যক্তির পিতা আমার পিতার বন্ধু ছিলেন। আমি রাসুল (সা.)কে বলতে শুনেছি- সৎকাজগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় সৎকাজ হলো পিতার বন্ধুদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।’ (রিয়াদুস সালিহিন, হাদিস : ৩৪২)