নামাজের রাকাতে সন্দেহ হলে যা করবেন
নামাজ মুমিনের শ্রেষ্ঠ ইবাদত। ঈমানের পর নামাজের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। যে জিনিসের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বেশি— সে জিনিসে মনোযোগ ও ঐকান্তিকতাও বেশি থাকতে হয়। তবে এরপরও নামাজে কারণে-অকারণে কারো কারো মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই হাদিসে নামাজে মনোযোগ ও আন্তরিকতা এবং একাগ্রতা ধরে রাখার একটা চমৎকার মাধ্যম শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সেটা হলো- নামাজ এমনভাবে পড়তে হবে— যেন আল্লাহ আমাকে দেখছেন এবং আমি তাকে দেখতে পাচ্ছি। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে, যেন তাঁকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখছেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০; মুসলিম, হাদিস : ০৮)
সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নামাজে যদি সন্দেহ তৈরি হয়, তাহলে কী করবেন? নামাজের রাকাতসংখ্যা নিয়ে যদি সন্দেহ হয়— তাহলে যা করণীয় তা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা—
বিজ্ঞাপন
♦ নামাজ পড়ার সময় রাকাতসংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে এবং এই সন্দেহ প্রথমবারের মতো হলে— ওই নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। পুনরায় নামাজ পড়া আবশ্যক। (ইবনে আবি শায়বা : ২/২৮)
♦ নামাজের সালাম ফেরানোর পর স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করার পর যদি রাকাতসংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয়, তাহলে তার নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। এই নামাজ আবার পড়তে হবে। (ইবনে আবি শায়বা : ২/২৮)
♦ কারো যদি নামাজের পর দৃঢ় বিশ্বাস হয় যে, কিছু রাকাত পড়া হয়নি— আর এমন অবস্থায় সে যদি সালাম ফিরিয়ে ফেলে, তাহলে সে নামাজপরিপন্থী কোনো কাজ না করে থাকলে ছুটে যাওয়া রাকাত পড়ে দেবে। যদি নামাজপরিপন্থী কোনো কাজ করে ফেলে, তাহলে ওই নামাজ পুনরায় পড়বে। (ইবনে আবি শায়বা : ২/২৪)
♦ যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ হওয়া তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে— তাহলে যেদিকে তার মন বেশি সায় দেবে, সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তবে কমটির ওপর আমল করবে এবং প্রত্যেক রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে এবং সব শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। (মুসলিম, হাদিস : ৮৮৮)
♦ তিন রাকাত পড়া হয়েছে নাকি চার রাকাত— সে ব্যাপারে সন্দেহ হলে তিন রাকাত মনে করে বসবে, এরপর চতুর্থ রাকাত পড়বে। শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৬৭৭)