জম্মু-কাশ্মিরের প্রখ্যাত আলেম মুফতি ফয়জুল ওয়াহেদ

গুজারি ভাষায় পবিত্র কোরআনের প্রথম অনুবাদক ও জম্মু-কাশ্মীরের প্রখ্যাত আলেম মুফতি ফয়জুল ওয়াহেদ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

মঙ্গলবার (০১ জুন) রাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে ৫৬ বছর হয়েছিল তার। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটা জানা গেছে।

মুফতি ফয়জুল ওয়াহেদের জানাজায় বিপুল সংখ্যক মুসল্লির উপচেপড়া ভিড় ছিল। ফলে করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ৪০ বার জানাজার নামাজ আদায় করা হয়।

তার মৃত্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন শোক প্রকাশ করে। জম্মু ও কাশ্মীর প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি জিকে মির শোক প্রকাশ করে এ মহান ব্যক্তিত্বের মৃত্যুকে ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ বলে আখ্যায়িত করেন।

এছাড়াও কংগ্রেসের মুখপাত্র রভিন্দ্র শর্মা শোক জানিয়ে বলেন, তিনি একজন বিদ্বান ব্যক্তি ও শান্তি ও ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য সর্বদা কাজ করতেন।

জম্মু ও কাশ্মীরের ‘আপনি’ পার্টির সভাপতি আলতাফ বুখারি শোক প্রকাশ করে বলেন, তার মৃত্যুতে সমাজে অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তিনি সবসময় সঠিক পন্থায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতেন।

জন্ম, পড়াশোনা ও খ্যাতি

চিকিত্সা ও প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে জম্মু ও কাশ্মীরের আদিবাসী ও উপজাতি শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য মুফতি ফয়জুল ওয়াহেদ সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। এছাড়াও সর্বপ্রথম পবিত্র কোরআন গুজারি ভাষায় অনুবাদ করার কারণে তার আলাদা খ্যাতি ছিল।

মুফতি ফয়জুল ওয়াহেদের জন্ম জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার দুদসনবালার থানামানদি গ্রামে। স্থানীয় স্কুলে মেট্রিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর ১৯৭৮ সালে তিনি মুজাফফর নগরের মাদরাসা তালিমুল কোরআনে ভর্তি হন। সেখান থেকে হাপুরে মাদরাসা খাদিমুল ইসলামে ভর্তি হন।

১৯৮৫ সালে বিশ্ববিখ্যাতি দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন। ১৯৯২ সালে ইসলামি আইন বিষয় পড়াশোনা সম্পন্ন করে তিনি আগ্রায় ড. ভিমরাও আমবেদকর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উর্দু ভাষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবন ও শিক্ষা-অবদান

জম্মু ও কাশ্মীরে অনেক মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন মুফতি ফয়জুল ওয়াহেদ। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিকা শিক্ষার ব্যবস্থা করেন তিনি। আদিবাসীদের শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে দারুণ ভূমিকা পালন করেন। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ব্যয়ভার বহন করতেন। তাই মুফতি ফয়জুল ওয়াহেদ— নামটি ও নামের ব্যক্তি সবার কাছে অনেক প্রিয় ও শ্রদ্ধার পাত্র।