তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের গুরুত্ব
তাহাজ্জুদ নামাজ নফল ইবাদত। এটি রাতের শেষ ভাগে ঘুম থেকে উঠে পড়া হয়। তাহাজ্জুদের ফজিলত সালিম (রা.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, আমি এক স্বপ্ন (আমার বোন উম্মুল মুমিনিন) হাফসা (রা.)-এর কাছে বর্ণনা করলাম। অতঃপর হাফসা (রা.) তা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে বর্ণনা করলেন। তখন তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ কতই ভালো লোক! যদি রাত জেগে সে নামাজ (তাহাজ্জুদ) আদায় করত!’ এরপর থেকে আবদুল্লাহ (রা.) খুব অল্প সময়ই ঘুমাতেন। (বুখারি, হাদিস : ১১২২)
উরওয়াহ (রহ.) বর্ণনা করেন, আয়েশা (রা.) আমাকে জানিয়েছেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) (তাহাজ্জুদে) ১১ রাকাত নামাজ আদায় করতেন এবং তা ছিল তার (স্বাভাবিক) নামাজ। সে নামাজে তিনি একেকটি সিজদা এত দীর্ঘ করতেন যে তোমাদের কেউ (সিজদা হতে) তার মাথা তোলার পূর্বে পঞ্চাশ আয়াত তিলাওয়াত করতে পারত। আর ফজরের (ফরজ) নামাজের পূর্বে তিনি দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। অতঃপর তিনি ডান কাতে শুতেন, যতক্ষণ না নামাজের জন্য তাঁর কাছে মুয়াজ্জিন আসত। (বুখারি, হাদিস : ১১২৩)
বিজ্ঞাপন
নফল নামাজ বসে পড়া
ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন, তিনি অর্শ রোগী ছিলেন, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বসে নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করল সে উত্তম আর যে ব্যক্তি বসে নামাজ আদায় করল তার জন্য দাঁড়ানো ব্যক্তির অর্ধেক সওয়াব আর যে শুয়ে আদায় করল, তার জন্য বসে নামাজ আদায়কারীর অর্ধেক সওয়াব। (বুখারি, হাদিস : ১১১৬)
উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, তিনি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে অধিক বয়সে পৌঁছার আগে কখনো রাতের নামাজ বসে আদায় করতে দেখেননি। (বার্ধক্যের) পরে তিনি বসে কিরাত পাঠ করতেন। যখন তিনি রুকু করার ইচ্ছা করতেন, তখন দাঁড়িয়ে যেতেন এবং প্রায় ৩০ কিংবা ৪০ আয়াত তিলাওয়াত করে রুকু করতেন। (বুখারি, হাদিস : ১১১৮)
দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়ে অক্ষম হলে
ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন, আমার অর্শ রোগ ছিল। তাই আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর খিদমতে নামাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম, তিনি বলেন, দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে, তা না পারলে বসে, যদি তা-ও না পারো, তাহলে শুয়ে। (বুখারি, হাদিস : ১১১৭)
রাতের যে অংশে তাহাজ্জুদ পড়া উত্তম
আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁকে বলেছেন, আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় নামাজ হলো দাউদ (আ.)-এর নামাজ। আর আল্লাহ তাআলার কাছে সর্বাধিক প্রিয় সিয়াম হলো দাউদ (আ.)-এর সিয়াম। তিনি [দাউদ (আ.)] অর্ধরাত পর্যন্ত ঘুমাতেন, এক-তৃতীয়াংশ তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন এবং রাতের এক-ষষ্ঠাংশ ঘুমাতেন। তিনি এক দিন সিয়াম পালন করতেন, এক দিন সাওমবিহীন অবস্থায় থাকতেন। (বুখারি, হাদিস : ১১৩১)