মেঘে ঘেরা থাকে যে মসজিদ
মেঘের কোলে মসজিদ! আসলেই তাই। সুউচ্চ পাহাড়ের সর্বোচ্চ শিখর। যেখানে মেঘের আনাগোনা প্রতিনিয়ত। সেখানেই একটি ছোট্ট মসজিদ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। একটু পরপর শ্বেত-শুভ্র মেঘ এসে মসজিদটিকে ঘিরে ধরছে। আবার কখনো রাশি রাশি মেঘমালা মসজিদ প্রাঙ্গণ ও পাশের খালি জায়গাজুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছে।
এই অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখলে মনে হয়, মেঘেদের সঙ্গে যেন মসজিদটির গভীর মিতালী! মসজিদের আঙিনা থেকে দাঁড়িয়ে নিচের দিকে হাত বাড়িয়ে কখনো ছোঁয়া যায়— মেঘের ভেলা। কখনো আবার মাথার সঙ্গে লাগোয়া শামিয়ানার মতো দেখায়। এমন প্রকৃতিঋদ্ধ ও পরিবেশবান্ধব দৃশ্য যে কাউকেই মোহিত করে।
বিজ্ঞাপন
অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশের মসজিদটি তুরস্কের পূর্বাঞ্চলের কৃষ্ণসাগরীয় বাইবুর্ট ও ট্র্যাবজন প্রদেশের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। ওখানকার সোগানলি পর্বতের সর্বোচ্চ চূড়ায় এটি নির্মিত এবং ‘কির্কলার মসজিদ’ হিসেবে পরিচিত।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মসজিদটি ৩ হাজার ২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। মসজিদে যাওয়ার পাহাড়ি রাস্তাটি অধিকাংশ সময় মেঘাচ্ছন্ন থাকে। মসজিদে যাওয়ার জন্য পর্বতের একপাশেই শুধু রাস্তার ব্যবস্থা রয়েছে। অন্য তিনপাশে রয়েছে গভীর গিরিখাদ।
গাড়ি চালিয়ে মসজিদে যাওয়ার পথটি অনুপযোগী হওয়ায় পাহাড়ের গায়ে নির্মিত পাথুরে পথ ধরে পায়ে হেঁটেই মসজিদে যেতে হয়। রাতযাপন করতে ইচ্ছুক পর্যটকদের জন্য মসজিদটিতে আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থাও রয়েছে।
বিপজ্জনক পাহাড়ের শিখরে শিলাপাথরের গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত মসজিদটি পর্যটকদের মনে আধ্যাত্মিক আবহ সৃষ্টি করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখান থেকে অবলোকন করার সুযোগ রয়েছে। ফলে পর্যটনের পাশাপাশি মসজিদটি আধ্যাত্মিকতা ও মননচর্চারও একটি জনপ্রিয় স্থানে পরিণত হয়েছে।
মসজিদে গেস্টবুক, পূর্ববর্তী দর্শনার্থীদের তথ্য সংযোজন ও প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকনকারী বিমুগ্ধ পর্যটকদের বিভিন্ন মন্তব্য সংরক্ষিত রয়েছে। মসজিদটি নির্মাণের সঠিক ইতিহাস নিশ্চিতভাবে জানা নেই। শুধু এতটুকু জানা যায়, পাহাড়ের আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা শিলা-পাথর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল এটি। সময়ের ব্যবধানে এটি সংস্কার করা হয় এবং কাঠ দিয়ে বিভিন্নভাবে আচ্ছাদিত করা হয়।
বিগত অনেক বছর যাবৎ পর্যটকরা মসজিদটিতে নিয়মিত যাওয়া-আসা করছেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রকৃতিপ্রেমীদের একটি অত্যন্ত প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে কির্কলার মসজিদ।