ঈসা (আ.) যেসব অলৌকিক ক্ষমতা পেয়েছিলেন
হজরত ঈসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন ইঞ্জিন কিতাব দিয়ে। তার জন্মকে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীবাসীর জন্য বানিয়েছেন একটি নিদর্শন। তাকে নিজ কুদরতে বাবা ছাড়া শুধু মায়ের গর্ভে জন্ম দিয়েছিলেন। হজরত জিবরাইলের মাধ্যমে মারইয়াম আলাইহাস সালামকে আল্লাহ তায়ালা একজন পবিত্র পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দেন।
হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম চিরকুমারী পূতঃপবিত্র মারইয়াম আলাইহাস সালামের কাছে এসে বললেন, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত একজন দূত। আল্লাহ তায়ালা আপনাকে একজন পুত্র সন্তান দান করতে চান। যিনি ভবিষ্যতে নবী হবেন, মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকবেন এবং কোলে থাকতেই কথা বলবেন।
বিজ্ঞাপন
এ কথা শুনে তিনি বললেন, আমার সন্তান কীভাবে হতে পারে, আমার তো বিয়েই হয়নি। কখনো কোনো পুরুষ আমাকে স্পর্শ করেনি, আমি ব্যভিচারিণীও নই।
উত্তরে জিবরাইল আলাইহিস সালাম মারইয়াম আলাইহাস সালামকে বললেন, এটা সত্য যে, স্বামী ছাড়া নারীর সন্তান হয় না, তবে আল্লাহ তায়ালা চাইলে সন্তান জন্মের কোনো উপকরণ ছাড়াও সন্তান জন্ম হওয়া সম্ভব। তিনি এই ঘটনাকে মানুষের জন্য নিদর্শন বানাতে চান। যেমন তিনি আদম আলাইহিস সালামকে মা-বাবা ছাড়া সৃষ্টি করেছেন।
হজরত ঈসা আ.-এর জন্মের পর পরিণত বয়সে আল্লাহ তায়ালা তাকে নবুয়ত দান করেছিলেন। নবী হিসেবে আল্লাহ তায়ালা তাকে বিশেষ কিছু মুজিযা বা অলৌকি ক্ষমতা দিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি সাধারণ মানুষের তুলনায় ব্যতিক্রমী কিছু কাজ করতে পারতেন।
আল্লাহ তায়ালা হজরত ঈসা আ.-কে যেসব বিশেষ মুজিযা দিয়েছিলেন তাহলো—
১. আল্লাহর হুকুমে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করা।
২. মাটি দ্বারা পাখি তৈরি করে ওর মধ্যে ফুঁ দিয়ে আল্লাহর নামে উড়িয়ে দেয়া।
৩. আল্লাহর হুকুমে শ্বেত-কুষ্ঠ রোগীকে ভালো করে দেয়া।
৪. জন্মান্ধকে আল্লাহর হুকুমে দৃষ্টি শক্তি দান করা।
৫. ভবিষ্যতের সংবাদ আল্লাহর হুকুমে প্রদান করা।
আরও পড়ুন
মুজিযা প্রসঙ্গে কুরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে এসেছি নিদর্শনসমূহ নিয়ে। আমি তোমাদের জন্য মাটির দ্বারা পাখীর আকৃতি তৈরি করি। তারপর তাতে যখন ফুৎকার প্রদান করি, তখন তা উড়ন্ত পাখীতে পরিণত হয়ে যায় আল্লাহর হুকুমে। আর আমি সুস্থ করি জন্মান্ধকে এবং শ্বেত কুষ্ঠ রোগীকে। আর আমি জীবিত করি মৃতকে আল্লাহর হুকুমে। আর আমি তোমাদেরকে বলে দিতে পারি যা তোমরা খেয়ে আস এবং যা তোমরা ঘরে রেখে আস। (সূরা ইমরান, আয়াত : ৪৯)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, ‘এবং আমি মরিয়ম তনয় ঈসাকে প্রকৃষ্ট মুজিযা দান করেছি এবং তাকে শক্তি দান করেছি ‘রুহূল কুদ্দুস’ অর্থৎ জিবরাঈলের মাধ্যমে।’ (সূরা বাকারা : আয়াত ২৫৩)