সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত ভোগ করছে। মানুষ সুখে থাক, দুঃখে থাক প্রতি মুহূর্তেই আল্লাহর নেয়ামতে ডুবে আছে। মানুষের জন্য আল্লাহ তায়ালার সব থেকে বড় নেয়ামত হলো শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ। কেউ হাজারো দুঃখে থাকলেও শুধু এতোটুকু ভেবে আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা উচিত যে আল্লাহ তায়ালা তাকে প্রতি মুহূর্তে শ্বাস নেওয়ার শক্তি দিয়েছেন। 

শ্বাস নেওয়ার শক্তি না থাকলে শক্তি না থাকলে মানুষ আর মানুষ থাকে না। তাকে লাশ বলা হয়। শুধু শ্বাস-প্রশ্বাসের কথা ভাবলেই আল্লাহর নেয়মতের প্রতি কৃতজ্ঞতায় মাথা নুয়ে আসে।

এছাড়াও মানুষ প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর অগণিত যে নিয়ামত গ্রহণ করছে তার হিসাব করলে গণনা করে শেষ করতে পারবে না। মানুষের আপাদমস্তক পুরোটাই মহান রবের মহানিয়ামতে ভরপুর। জীবনভর গণনা কিংবা চিন্তা গবেষণা করে এ নিয়ামতের প্রকৃত সংখ্যা কখনোই বের করা সম্ভব নয়। 

মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি আল্লাহর নিয়ামত গণনা করো, শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সূরা আন নাহল, আয়াত : ১৮)

মানুষের দেহের বাইরে ভোগ্য-অভোগ্য, দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান অসংখ্য নিয়ামত, যা মূলত মহান আল্লাহরই মহা-অনুগ্রহ, মহাদান। এসব নিয়ামতের বেশির ভাগ মানুষ আল্লাহর কাছে চায়, আবার কোনোটি না চাইলেও মহান রব তার বান্দাদের আপন অনুগ্রহে দান করেন। 

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যেসব বস্তু তোমরা চেয়েছো, তার প্রত্যেকটি থেকেই তিনি তোমাদের দিয়েছেন। যদি আল্লাহর নিয়ামত গণনা করো, তবে গুণে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয়ই মানুষ অত্যন্ত অন্যায়কারী, অকৃতজ্ঞ।’ (সূরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩৪)

মানুষ আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত ভোগ করার কারণে আল্লাহর ভাণ্ডারে একটু কমতি দেখা দেয় না। বরং বান্দা নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করলে তিনি তা বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায়ের জন্য নিচে বর্ণিত দোয়াটি পড়া যেতে পারে প্রতিদিন। দোয়াটি হলো—

اَللّٰهُمَّ مَاۤ اَصْبَحَ بِــيْ مِنْ نِعْمَةٍ فَمِنْكَ وَحْدَكَ لَا شَرِيْكَ  لَكَ، فَلَكَ الْحَمْدُ وَلَكَ الشُّكْرُ

অর্থ : হে আল্লাহ! আমার প্রতি সকালে যে নেয়ামত রয়েছে তা কেবল তোমার পক্ষ থেকেই। তোমার কোনো শরীক নেই। সকল প্রশংসা কেবল তোমার জন্য এবং সকল শোকরও কেবল তোমার জন্য।

বি.দ্র. সকালে পাঠকালে مَا اَصْبَحَ আর সন্ধ্যায় পাঠকালে সেই স্থানে مَا اَمْسٰى পড়তে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সকালে এই দোয়া পাঠ করবে, সে ওই দিনের সকল নেয়ামতের শোকর আদায় করলো। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় পাঠ করলো, সে ওই রাতের সকল নেয়ামতের শোকর আদায় করলো। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস: ৫০৭৩)