অসুস্থ ব্যক্তির নামাজ পড়ার নিয়ম
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। সর্বাবস্থায় নামাজ আদায় প্রতিটি মুমিনের ওপর অত্যাবশক। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলেও নামাজ আদায় করতে হবে। তবে নামাজ আদায়ের ধরনে তখন ভিন্নতা আসে।
এরপরও তার নামাজ আদায় রহিত হবে না। শুধু তিন ব্যক্তির নামাজ সাময়িক রহিত হয়— অপ্রাপ্তবয়স্ক, মানসিক ভারসাম্যহীন ও ঘুমন্ত ব্যক্তি।
বিজ্ঞাপন
অসুস্থ ব্যক্তি যেভাবে নামাজ পড়বে
রাসুল (সা.) বলেন, ‘দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো, যদি না পারো তাহলে বসে নামাজ পড়ো, যদি তাও না পারো, তাহলে ইশারা করে নামাজ আদায় করো। (বুখারি, হাদিস : ১০৫০)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, অসুস্থ অবস্থায়ও নামাজ ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
অক্ষম ব্যক্তির নামাজ আদায়
যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে অক্ষম, সে বসে বসে রুকু-সিজদা আদায় করে নামাজ পড়বে।
বসে রুকু-সিজদা আদায়কারী নামাজে রুকুর তুলনায় সিজদায় সামান্য বেশি ঝুঁকবে। না হয় তার নামাজ শুদ্ধ হবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৬)
বসে সিজদা করার জন্য কোনো জিনিস ওপরে তোলা এবং সেটাতে সিজদা করা— এসবের প্রয়োজন নেই। (সুনানে কুবরা, হাদিস : ৩৮১৯; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ১/২৭৩)
ইশারা করে নামাজ আদায়
অসুস্থতার কারণে বসে নামাজ পড়তে অপারগ হলে, শুয়ে ইশারার মাধ্যমে নামাজ পড়বে। তখন (অসুস্থের) পা কিবলার দিকে করে শোয়াতে হবে। মাথা সামান্য ওপরে তুলে শোয়াবে; যাতে চেহারা কিবলার দিকে হয়। এরপর ইশারা করে রুকু-সিজদা করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১/২৭৩)
তখন যদি অন্তত মাথা দিয়েও ইশারা করা হয়— তা রুকু-সিজদার স্থলাভিষিক্ত বিবেচিত হবে।
মাথা দিয়ে ইশারা কখন করবে
অসুস্থ ব্যক্তি যদি মাথা দিয়েও ইশারা করার সক্ষমতা না রাখে— তাহলে এ অবস্থা কতক্ষণ থাকে, তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি পাঁচ ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর অবস্থার উন্নতি হয়, তাহলে ওই সব নামাজ মাথা দিয়ে ইশারা করে কাজা করবে। যদি এর চেয়ে বেশি সময়েও উন্নতি না হয়, তাহলে ওই সব নামাজ তার দায়িত্ব থেকে চলে যাবে। এগুলো তাকে আর আদায় করতে হবে না। (মুআত্তা মুহাম্মদ, হাদিস : ২৭৮; দারাকুতনি, হাদিস : ১৮৮৩)
হুঁশ হারালে বা পাগল হলে
কোনো লোক পাগল বা বেহুঁশ হয়ে পড়লে— তখন দেখতে হবে কতক্ষণ পর্যন্ত এভাবে থাকে। যদি পাঁচ ওয়াক্ত বা তার কম সময় হয়, তাহলে ভালো হওয়ার পর তা কাজা করবে। যদি এর চেয়ে বেশি হয়, তবে ওই সময়কার নামাজ কাজা করতে হবে না।
যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ শুরুর পর দাঁড়াতে অক্ষম হয়ে যায়, তখন সে বসে নামাজ পরিপূর্ণ করবে। যদি বসতেও অক্ষম হয়, তাহলে শুয়ে হলেও তা পরিপূর্ণ করবে। (বুখারি, হাদিস : ১০৫০)