অনেক সময় বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। এসব থেকে উত্তরণের জন্য তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেন কেউ কেউ। একেকজনের সিদ্ধান্ত হয় একেক রকম। কেউ কারো সাহায্য গ্রহণ করেন। কেউবা নিজেই উত্তরণের চেষ্টা করেন। কেউ আবার আল্লাহর ওপর ভরসা করেন। কেউ আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে কোনো মাধ্যমে দুর্ঘটনা, বিপদ ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেন।

বিপদ থেকে উত্তরণের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে মানত করার প্রবণতা রয়েছে। যেমন— কেউ সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়লে জানের বদলে জানের মানত হিসেবে বকরি বা কোনো কিছু কোরবানির মানত করেন। আবার অনেকে সন্তান ভূমিষ্টের সময় মায়ের কষ্ট হলে এর বিনিময়েও খাসি বা গরুর কোরবানির মানত করেন।

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে জানের বদলে (হালাল পশুর) জানের দান, সদকা, কুরবানি করার মান্নত করা নিষেধ নয়। তবে এ মান্নত দ্বারা কোরবানির উপযুক্ত একটি সম্পূর্ণ জন্তু দান করা ওয়াজিব হবে। 

কেননা, কোরআন মাজিদে আল্লাহতায়ালা হজরত ইবরাহীম (আ.) কর্তৃক তার পুত্র ইসমাঈলের কোরবানির পরিবর্তে পশু কোরবানি করার কথা উল্লেখ করে বলেন - ‘আমি তার পরিবর্তে দিলাম জবেহ করার জন্যে এক মহান জন্তু’। (সুরা সাফফাত, ১০৭ আয়াত)।

আলেমদের মতে, দুর্ঘটনা, বিপদ ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে জানের বদলে জান, এই ধরনের মানত করা ইসলামের শরীয়তের মধ্যে জায়েজ। কিন্তু ইসলাম এই কাজকে উৎসাহিত করে না। বরং, ইসলাম এ জাতীয় কাজে সদকার প্রতি উৎসাহিত করে। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সদকাই উত্তম পন্থা। আর এই সদকা হতে পারে পশু কোরবানি, টাকা দান করার মাধ্যমে। সদকার বিভিন্ন মাধ্যম ও উপায় আছে। 

জানের বদলে জানের সদকা বলির পর্যায়ে পড়বে না। কারণ, বলি দেব-দেবীর নামে করা হয়ে থাকে। মুসলমানেরা আল্লাহর নামে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আল্লাহর বিধানের আলোকে এই কাজটি করে থাকেন। ফলে এটাকে বলি বলা যাবে না। তাই কেউ যদি এই ধরনের মানত করে থাকেন, তাহলে ওয়াজিব হচ্ছে, এই ধরনের মানতপূরণ করা। তবে উত্তম হচ্ছে, অসুস্থ বা সংকটগ্রস্ত মানুষের জন্য দান করে দেওয়া।