কোরআন তিলাওয়াতের জন্য অবশ্যই শরীর পবিত্র থাকতে হয়। কোরআন দেখে দেখে এবং স্পর্শ করে পড়তে চাইলে অজু থাকা আবশ্যক। তবে কারও যদি শরির পবিত্র থাকে, কিন্তু অজু না থাকে, তাহলে এমন ব্যক্তি কোরআন শরিফ স্পর্শ করে পড়তে পারবে না। তবে শুধু মুখস্ত কোরআন তিলাওয়াত করতে চাইলে তা করতে পারবে। 

কারও অজু না থাকলেও শরীর পবিত্র থাকলে সে চাইলে শুয়ে, বসে, দাঁড়িয়ে, গাড়িতে বসে, কাজের ফাঁকে ফাঁকে যখন-যেভাবে খুশি মুখস্থ কোরআন তিলাওয়াত করতে পারবে। এছাড়াও কোরআনের আয়াত ও হাদিস সম্বলিত বই-পুস্তক, তাফসীর গ্রন্থ, হাদিস গ্রন্থ ইত্যাদি অজু ছাড়া ধরতে বা পড়তে কোনও বাঁধা নেই।

কারো যদি অনলাইনে কোরআন ক্লাস করতে গিয়ে কোরআনের আয়াত স্পর্শ করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে তাকে অজু করে তারপর কোরআন স্পর্শ করতে হবে। অন্যথায় অজু না করলেও চলবে। তবে কোরআনের সম্মানের  প্রতি লক্ষ্য রেখে অজু করে নেওয়াই উত্তম।

কোরআন তিলাওয়াতের ফজিলত

আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, কিছু মানুষ আল্লাহর পরিজন। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসুল, তারা কারা? তিনি বলেন, কোরআন তেলাওয়াতকারীরা আল্লাহর পরিজন এবং তাঁর বিশেষ বান্দা।’ -(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১৫)

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর বর্ণনায় এসেছে, ‘যে আল্লাহর কিতাবের একটি হরফ পড়বে, সে একটি নেকি পাবে। আর প্রতিটি নেকি দশগুণের সমান। আমি বলি না: ‘আলিফ লাম মিম’ একটি হরফ; বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, মিম একটি হরফ।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৯১০)

কোরআন তেলাওয়াতের যেমন সওয়াব রয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে কুরআনের অর্থ ও মর্মাথ অনুধাবন করাও কোরআন-হাদিসেরই নির্দেশনা। এমন নয় যে, একজন সারাজীবন শুধু কোরআন তেলাওয়াতই করে যাবে বা শুধু কোরআন মুখস্ত করেই বসে থাকবে। বরং কোরআনের অর্থ ও ব্যাখ্যা বোঝার জন্যেও চেষ্টা করতে হবে। 

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আপনার প্রতি এ বরকতপূর্ণ কিতাব নামিয়েছি; তারা যেন এর আয়াতগুলো অনুধাবন করে এবং জ্ঞানীরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা সোয়াদ, আয়াত : ২৯)