প্রতীকী ছবি

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সবার ওপর ফরজ। প্রতিদিন নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতে আদায় করা জরুরি। কোনো কারণে জামাতে আদায় করতে না পারলে পরবর্তীতে আদায় করে নিতে হবে। সময়মতো পড়তে না পারলে কাজা পড়ে নিতে হবে। কোনোভাবে নামাজ ছাড়া যাবে না। 

গ্রহণযোগ্য কারণে জামাত ছাড়া নামাজ (ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব, এশা) পড়া গেলেও জুমার নামাজ জামাত ছাড়া পড়া যাবে না। জুমার নামাজের জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো জামাতে নামাজ পড়া এবং ইমাম ছাড়া অন্তত তিনজন মুসল্লি উপস্থিত থাকা। এই শর্তগুলো পাওয়া না গেলে জুমার পরিবর্তে জোহর আদায় করতে হবে।

অনেকের ধারণা মসজিদ ছাড়া অন্য জায়গায় জুমার নামাজ আদায় করা যায় না। বিষয়টি এমন নয়। বরং জুমার জন্য যেসব শর্ত রয়েছে তা পাওয়া গেলে মসজিদের বাইরে অন্যান্য খোলামেলা জায়গা বা মাঠেও জুমার নামাজ পড়া যাবে। জুমার নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য যেসব শর্ত রয়েছে এখানে তুলে ধরা হলো—

১. শহর বা উপশহর হতে হবে। গ্রামে বা জনমানবহীন বিরান স্থানে জুমার নামাজ শুদ্ধ হবে না।

২. জামাতে জুমার নামাজ পড়তে হবে। ইমাম ছাড়া কমপক্ষে তিনজন মুসল্লী হতে হবে। অর্থাৎ মোট চারজন ছাড়া জুমার নামাজ আদায় করা যাবে না।

৩. জোহরের সময় হতে হবে।

৪. সকলের জন্য নামাজে অংশগ্রহণের আম (সাধারণ) অনুমতি থাকতে হবে।

৫. খুতবা দিতে হবে।

গ্রাম বলতে এমন এলাকাকে বুঝায়, যেখানে রাষ্ট্রীয় কোন প্রতিনিধি, মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় আসবাব সহজলভ্য নয়। এমন সুবিধাবঞ্চিত এলাকাকে মূলত গ্রাম বলা হয়।

সুতরাং আমাদের বাংলাদেশের প্রচলিত গ্রাম যেখানে রাষ্ট্র প্রতিনিধিসহ আবশ্যকীয় সুবিধা বিদ্যমান, সেটাকে গ্রাম বলা যাবে না। বরং তা উপশহরের স্থলাভিষিক্ত হবে।

তবে খাগড়াছড়ি, বান্দরবনের গহীন জঙ্গলে বসবাসকারীরা গ্রামের বাসিন্দা। তাদের জুমার নামাজ পড়তে হলে এমন জায়গায় আসতে হবে যেখানে জুমার জন্য উপরে উল্লেখিত শর্তগুলো পাওয়া যায়।

এক হাদিসে হজরত আলী রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, শহর ছাড়া জুমা ও ঈদের নামাজ নেই। (তাহাবী শরিফ, হাদিস :১১৫৪)

আরেক হাদিসে হজরত হুজাইফা রা. বলেন, গ্রামে জুমার নামাজ নেই। জুমা হবে শহরে। যেমন মাদায়েন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদিস : ৫০৬০)

ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, জুমার নামাজ ও পাঞ্জেগানা নামাজ সবই জামাতের সঙ্গে শরয়ী মসজিদে আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। কোনো কারণ ছাড়া মসজিদের বাইরে অন্য কোথাও পড়া উচিত নয়। 

আর জুমার নামাজের বিশেষত্ব হলো, এ নামাজে জামাত অপরিহার্য। জামাত ছাড়া জুমা হয় না। তবে জুমার জন্য মসজিদ জরুরি, মসজিদ ছাড়া, খোলা জায়গা বা মাঠে জুমা হয় না একথা ঠিক নয়। বরং যেখানে রাষ্ট্রীয় কোন প্রতিনিধি, মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় আসবাব সহজলভ্য এমন জায়গায় মসজিদ ছাড়াও অন্য জায়গায় জুমার নামাজ পড়া যাবে।

আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য গোটা ভূপৃষ্ঠকে মসজিদ বানিয়ে দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৫; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫২২)