প্রতীকী ছবি

আসহাবে সুফফা খ্যাত সাহাবিদের জামাতের অন্যতম সদস্য ছিলেন বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রা.। তিনি রাসূল সা.-থেকে সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছেন। আসহাবে সুফফার সাহাবিদের ক্ষুধা, কষ্ট, যন্ত্রণা সহ্য করতে হতো। তবে অন্য সাহাবিদের তুলনায় তারাই সব থেকে বেশি রাসূল সা.-এর সংস্পর্শ লাভের সুযোগ পেতেন। রাসূল সা.-এর অনেক মুজিজা ও বরকতের ঘটনার সাক্ষী সাহাদিদের এই দল।

আসহাবে সুফফার অন্যতম সদস্য আবু হুরায়রা রা. রাসূল সা.-এর একেবারে কাছে থেকে দেখা একটি বরকতের ঘটনা বর্ণনা করেছেন এভাবে—

ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে একদিন আমি রাস্তার মাথায় গিয়ে বসে পড়লাম। এ সময় আবু বকর রা. সেদিক দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি তাকে কোরআনের একটি আয়াতের অর্থ জিজ্ঞেস করলাম। উদ্দেশ্য ছিল, তিনি আমার অবস্থা ও প্রয়োজন বুঝতে পেরে হয়তো আমাকে তার সঙ্গে খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাবেন। কিন্তু তিনি আমার অবস্থা বুঝতে পারলেন না। সেখান থেকে চলে গেলেন।

ওমর রা. সেই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাকেও জিজ্ঞেস করলাম, কিন্তু তিনিও আমার অবস্থা বুঝতে না পেরে সেখান থেকে চলে গেলেন।

এরপর রাসূল সা. সেই পথে যাওয়ার সময় আমাকে দেখে মুচকি হাসলেন এবং তিনি আমার অবস্থা বুঝতে পেরে আমাকে তার সঙ্গে নিয়ে গেলেন। তখন তাঁর ঘরে এক পেয়ালা দুধ ছিল। তিনি আমাকে বললেন, আসহাবে সুফফার সবাইকে ডেকে নিয়ে এসো।

রাসূল সা. আসহাবে সুফফাকে ডাকতে বলায় আমি মনে মনে কিছুটা কষ্ট পেলাম। আমার মনে হলো, মাত্র এক পেয়ালা দুধ, এটা দিয়ে কীভাবে পুরো আসহাবে সুফফাকে খাওয়ানো যাবে! অথচ এটা আমি খেতে পারলে আমার শরীরে কিছুটা শক্তি ফিরে পেতাম। আসহাবে সুফফা এলে রাসূল সা. আমাকে পুরোটাই তাদের মাঝে বন্টন করে দিতে বলবেন, তাদের দেওয়ার পর আমার জন্য আর কিছুই থাকবে না। কিন্তু রাসূল সা.-এর আনুগত্য না করে উপায় ছিল না, তাই আমি আসহাবে সুফফাকে ডেকে আনলাম। তাদের সবাই এই দুধ তৃপ্তি ভরে পান করলেন।

তখন রাসূল সা. আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন এবং বললেন, এখন তুমি আর আমিই বাকি আছি। তুমি তৃপ্তিভরে পান করো। আমি সেই পেয়ালা থেকে তৃপ্তি নিয়ে পান করলাম, আমার পেট ভরে গেল। এরপর আমি সেই পেয়ালা রাসূল সা.-কে দিলাম, তিনিও সেখান থেকে পান করলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩৭৫, ৬২৪৬, ৬৪৫২; জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৪৭৭)