প্রতীকী ছবি

রাসূল সা. এক হাদিসে বলেছেন, পাঁচটি বিষয় ইসলামের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। তার মধ্যে একটি হল, খাতনা করা। (সুনানে আবূ দাউদ, মিশকাতুল মাসাবীহ ১/৪৪)

অন্য হাদীসে বর্ণিত আছে, চারটি কাজ নবীদের সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। তার মধ্যে একটি হল, খতনা করা। (সুনানে তিরমিজি, মিশকাতুল মাসাবীহ : ৪৪-৪৫)

এ কারণে ফেকাহবিদ আলেমরা খতনাকে শিআরে ইসলাম বা ইসলামের অপরিহার্য নিদর্শন ও সুন্নতে মুয়াক্কাদা হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। 

মুসলিম জাতির পিতা বলে পরিচিত হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সময়কাল থেকে এই সুন্নতের প্রচলন হয়। নবীদের মধ্যে তিনিই প্রথম সুন্নতে খৎনা করেন। এজন্য খৎনাকে সুন্নতে ইবরাহিমও বলা হয়।

ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ৮০ বছর বয়সে খৎনা করেন বলে হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে হজরত আবু আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইবরাহিম আলাইহিস সালাম আশি বছরোর্দ্ধ বয়সে খৎনা করেন। তিনি কাদূম নামক স্থানে খৎনা করেন। ইমাম বুখারি রহিমাহুল্লাহ বলেন, ’কাদুম’ একটি জায়গার নাম। (বুখারি, মুসলিম, আল আদাবুল মুফরাদাত, ১২৫৬)

অপর এক বর্ণনায় রয়েছে তিনি ১২০ বছর বয়সে খৎনা করেছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এক শত বিশ বছর বয়সে খৎনা করেন। এরপর তিনি আশি বছর জীবিত ছিলেন। 

খতনা সাধারণত হাজামের মাধ্যমে করা হয়। বর্তমানে ডাক্তারের মাধ্যমেও খতনা করানোর প্রচলন শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে মুসলিম হাজাম বা ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া হয় বেশির ভাগ সময়। তবে কোথাও অমুসলিম কেউ খতনা করানোর কাজ করলে তার মাধ্যমেও খতনা করানো যাবে।

এ বিষয়ে ইসলামি চিন্তাবিদদের মতামত হলো— পালনীয় বিধানগুলো দুই ধরনের। একটি হলো মুখ্য, আরেকটি হলো সহায়ক। মুখ্য বিধি-বিধান বাস্তবায়নের জন্য অবশ্যই মুসলমান হতে হবে। আর সহায়ক বিধি-বিধান বাস্তবায়নের জন্য মুসলিম হওয়া জরুরি নয়, তবে হলে ভালো। যেহেতু খতনা সহায়ক বিধানের অন্তর্ভুক্ত, তাই অমুসলিম দ্বারাও খতনা করা যাবে।

(কিফায়াতুল মুফতি : ২/২৯৬, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১২/৩৯০)