প্রতীকী ছবি

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার প্রতি ইসলামে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যে ব্যক্তি তাড়াতাড়ি ঘুমায় তার জন্য সকালে তাড়াতাড়ি ওঠা সম্ভব হয় ফজর নামাজ পড়া সহজ হয়। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমালে হাদিসে বর্ণিত সকালের বরকত পাওয়া সম্ভব।

ঘুমের মধ্যে মানুষ অচেতন থাকে, এ সময় নিজের সঙ্গে কী ঘটে তা বলা সম্ভব হয় না কারো পক্ষে। অচেতনতার কারণে পরিচ্ছন্ন-পরিপাটি মানুষকে ঘুম থেকে ওঠার পর অপ্রস্তুত মনে হয়। প্রাকৃতিক কারণে ঘুম থেকে ওঠার পর মানুষের শরীরে ময়লা ও অপরিচ্ছন্নতা জমে যায়। 

রুচিশীল যেকোনো মানুষই ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই পরিচ্ছন্ন হওয়ার কাজ করেন। ইসলামে ঘুমের আগের এবং পরের কাজকর্ম নিয়ে নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। পরিচ্ছন্নতার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে রাসূল সা. ঘুম থেকে ওঠে আল্লাহর প্রশংসা ও দোয়া কালাম পাঠের পর প্রথমেই হাত ধোয়ার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন।

হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন অজু করে তখন সে যেন তার নাকে পানি দিয়ে ঝাড়ে। আর যে শৌচকার্য করে সে যেন বিজোড় সংখ্যায় ঢিলা (টিস্যু) ব্যবহার করে। আর তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে জাগে তখন সে যেন অজুর পানিতে হাত ঢুকানোর পূর্বে তা ধুয়ে নেয়; কারণ তোমাদের কেউ জানে না যে, ঘুমন্ত অবস্থায় তার হাত কোথায় থাকে। (বুখারি, হাদিস : ১৬২ মুসলিম, হাদিস : ২৭৮)

এছাড়াও ঘুম থেকে উঠে আরও যেসব কাজ করা যেতে পারে তা তুলে ধরা হলো—

>>ঘুম থেকে উঠে দোয়া পড়া—

الحمدلله الذي أحيانا بعدما أماتنا و إليه النّشور

উচ্চারণ : ‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।’


অর্থ : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদের মৃত বানানোর পর জীবিত করেছেন। আর তার দিকেই পুনরুত্থান। (বুখারি, হাদিস : ৬৩২৪)

তিন. আল্লাহর কাছে দোয়া করা। উবাদা ইবনে সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতের ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে এই দোয়া পাঠ করবে—

لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير، الحمد لله، وسبحان الله، ولا إله إلا الله الله أكبر، ولا حول ولا قوة إلا بالله.

উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীর, আল-হামদু লিল্লাহ, ওয়া সুবহানাল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।’

>> মিসওয়াক করা। রাসুল (সা.) ঘুম থেকে উঠে মিসওয়াক করতেন। (বুখারি, হাদিস : ২৪৫)

মিসওয়াক করতে না পারলে ব্রাশ করে নেবে অথবা অন্য কোনোভাবে দাঁত ও মুখ পরিস্কার করে নেবে।

>>. অজু করে পবিত্রতা অর্জন করে নেওয়া। আর গোসল ফরজ হলে, গোসল করে পবিত্র হয়ে নেওয়া।

>>জামাতের সঙ্গে ফজরের সালাত আদায় করবে। এরপর নিজের কাজে বা বিশ্রামে কিংবা নাস্তা ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করবে। আল্লাহ তাআলা সবার দিন সুন্নত মোতাবেক শুরুর তাওফিক দান করুন।