নামাজে অবহেলাকারী ব্যক্তিকে নিয়ে যা বলেছেন ওমর রা.
অর্ধজাহানের শাসক হিসেবে পরিচিত ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তার শাসনামলে সর্বাধিক অঞ্চল মুসলমানদের অধীনে আসে। হজরত আবু বকর রা.-এর ইন্তিকালের পর ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুসলিম জাহানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
খেলাফত লাভের পর ওমর ফারুক রা. একটি ভাষণ দেন। জাতির উদ্দেশে দেওয়া সেই বক্তব্যে তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলেন, ‘হে আল্লাহ! আমি দুর্বল, আমাকে শক্তি দাও। হে আল্লাহ! আমি রূঢ় স্বভাবের, আমাকে কোমলপ্রাণ বানাও। হে আল্লাহ! আমি কৃপণ, আমাকে দানশীল বানাও।’
বিজ্ঞাপন
তার সময়ে অনেক অঞ্চল বিজয় করেছিলেন মুসলিমরা। বিজিত অঞ্চলের কোনো কোনো প্রদেশের আয়তন ছিল দুটি প্রদেশের সমান। কোনো কোনো প্রদেশের আবার দুটি কেন্দ্র ছিল এবং প্রত্যেকটি কেন্দ্রে পৃথক পৃথক কর্মকর্তা ও কর্মচারী ছিল। প্রত্যেক প্রদেশের, একজন ওলী বা কর্মকর্তা, একজন কাতিব (সচিব) বা মীর মুনশী, একজন সেনানায়ক, একজন সাহিবুল খারাজ বা কালেক্টর, একজন পুলিশ অফিসার, একজন ট্রেজারি অফিসার এবং একজন বিচারক থাকতো। এভাবে তার খেলাফত হয়ে উঠেছিল সুনিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল।
বিভিন্ন প্রদেশের কর্মকর্তাদের কাছে ওমর রা. বিভিন্ন সময় নির্দেশ ও নসিহত লিখতেন। এতে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা থাকতো। এক নির্দেশনামায় তিনি তাদের সবাইকে নামাজের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। হজরত নাফি রহ. থেকে বর্ণিত, ওমর ইবনুল খাত্তাব রা. তাঁর (অধীনস্থ) কর্মকর্তাদের কাছে লিখেছেন—
আমার মতে তোমাদের জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে নামাজ, অতএব যে নামাজের রক্ষণাবেক্ষণ করল এবং (নিষ্ঠার সাথে) পালন করল সে নিজের দ্বীনের হিফাজত করল, আর যে নামাজকে নষ্ট করল, সে নামাজ ছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় দীনি কাজেরও অধিক নষ্টকারী হবে।
আরও পড়ুন
তিনি আরও লিখেছেন, তোমরা জোহরের নামাজ আদায় করো যখন ফাই (সূর্য পশ্চিমে হেলিয়া পড়ার পর যে ছায়া হয় তা) এক হাত হয়। এই নামাজের সময় তোমাদের প্রত্যেকের ছায়া তার সমপরিমাণ হওয়া পর্যন্ত। আর আসরের নামাজ আদায় করো যখন সূর্য উর্ধ্বে উজ্জ্বল ও পরিচ্ছন্ন থাকে। (সেই সময় থেকে) সূর্যাস্তের আগে সওয়ারী ব্যক্তি দুই বা তিন ফরসখ চলতে পারে এতটুকু সময় পর্যন্ত।
আর মাগরিব আদায় করো যখন সূর্য ডুবে যায়, আর ইশা আদায় করো (শফক) অদৃশ্য হওয়ার পর হতে এক-তৃতীয়াংশ রাত পর্যন্ত। আর যে (ইশা আদায় করে না) ঘুমাতে যায় তার চোখে যেন ঘুম না আসে, আর যে ঘুমাতে যায় তার চোখে যেন ঘুম না আসে, আর যে ঘুমাতে যায় তার চোখে যেন ঘুম না আসে।
আর ফজর (আদায় করো) যখন আকাশের তারাগুলো পরিষ্কারভাবে প্রকাশিত হয়...
( বাইহাকী, সুনানে কুবরা ১/৪৪৫, তাহাবী শরহে মানিল আসার ১/১৯৩, মুয়াত্তা মালিক)