মুসলিম নারীদের সর্দার হজরত ফাতিমা রাদিয়াল্লাল্লাহু তায়ালা আনহা। নবুয়তের পাঁচ বছর আগে তিনি খাদিজা রা.-এর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাসূল সা.-এর সন্তানদের মধ্যে সবচেয়ে আদরের ছিলেন।

রাসূল সা.-কে আল্লাহ তায়ালা নবুয়তের দায়িত্ব প্রদানের পর সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন উম্মুল মুমিনীন মহীয়সী খাদিজা রা.। তাঁর সঙ্গে প্রথম পর্বে যেসব নারী রাসূলের ওপর ঈমান আনেন এই কাতারে নবীজির কন্যারা ছিলেন।

তারা হলেন, যায়নাব, রুকাইয়্যা, উম্মু কুলছুম ও ফাতিমা রা.। তাঁরা তাঁদের বাবার ওপর নবুয়ত ও রিসালাতের প্রতি ঈমান আনেন মা খাজিদার সঙ্গে।

ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক হজরত আয়িশা রা.-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন—

আল্লাহ তায়ালা যখন তাঁর নবীকে নবুয়তে ভূষিত করলেন তখন খাজিদা ও তাঁর কন্যারা ইসলাম গ্রহণ করেন। এভাবে রাসূল সা.-এর কন্যারা তাঁদের মায়ের সঙ্গে প্রথমভাগেই ইসলামের আঙ্গিনায় প্রবেশ করেন এবং তাঁদের পিতার রিসালাতে বিশ্বাস স্থাপন করেন। 

নবীজি নবুয়ত লাভের আগেই তারা উন্নত নৈতিক গুণাবলী অর্জন করেছিলেন। ইসলামের পর তা আরও সুশোভিত ও সুষমামণ্ডিত হয়ে উঠে।

ইমাম আয-যুরকানী শারহুল মাওয়াহিব গ্রন্থে ফাতিমা রা. ও তাঁর বোনদের প্রথম পর্বে ইসলাম গ্রহণের কথা বলেছেন এভাবে—

তাঁর মেয়েদের ইসলাম গ্রহণের কথা আলাদাভাবে বলার প্রয়োজন নেই। কারণ, নবুয়তের আগে থেকেই তাঁরা তাঁদের বাবার জীবন, আচার-আচরণ দৃঢ়ভাবে অনুসরণ ও শক্তভাবে আকড়ে ধরার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

অন্য এক গ্রন্থে তিনি বলেন, নবী-কন্যাদের ইসলাম গ্রহণের অগ্রগামিতার ব্যাপারে কোনো প্রমাণের প্রয়োজন নেই। সর্বাধিক সত্য, সর্বাধিক অভিজাত পিতৃত্ব এবং সবচেয়ে ভালো ও সর্বাধিক স্নেহময়ী মাতৃত্বের ক্রোড়ে বেড়ে ওঠার কারণে তাঁরা লাভ করেছিলেন তাদের বাবার সর্বোত্তম আখলাক। বাবার কাছ থেকে নৈতিকতা এবং মায়ের কাছ থেকে বুদ্ধিমত্তা লাভ করেন। সুতরাং তাদের ইসলাম ছিল স্বচ্ছ ও স্বভাবগত ইসলাম। তারা ঈমান, নবুয়ত, উন্নত নৈতিকতার ছায়ায় বেড়ে ওঠেন। 

(আসহাবে রাসূলের জীবনকথা, ৬/৩৮)