প্রতীকী ছবি

মুনযির ইবনু জারীর তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা ভোরের দিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় তার কাছে জুতা ছাড়া, বস্ত্রহীন, গলায় চামড়ার আবা পরিহিত এবং নিজেদের তরবারি ঝুলন্ত অবস্থায় একদল লোক এলো। এদের অধিকাংশ কিংবা সকলেই মুযার গোত্রের লোক ছিল। অভাব অনটনে তাদের এ করুণ অবস্থা  হয়েছিলে।

তাদের অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখমণ্ডল পরিবর্তিত ও বিষন্ন হয়ে গেল। তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন, এরপর বেরিয়ে আসলেন। তিনি বিলাল রা.-কে আজান দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। বিলাল রা. আযান ও ইকামাত দিলেন। নামাজ শেষ করে তিনি উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন এবং এ আয়াত পাঠ করলেন—

‘হে মানব জাতি! তোমরা নিজেদের প্রতিপালককে ভয় কর যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি (আদম) থেকে সৃষ্টি করেছেন। ..... নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তোমাদের রক্ষণাবেক্ষণকারী"- (সূরা আন নিসা, আয়াত : ১)। 

এরপর তিনি সূরা হাশরের শেষের দিকের এ আয়াত পাঠ করলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তি যেন ভবিষ্যতের জন্য কী সঞ্চয় করেছে সেদিকে লক্ষ্য করে- (সূরা হাশর, আয়াত : ১৮)।

এরপর উপস্থিত লোকদের কেউ তার দীনার, কেউ দিরহাম, কেউ কাপড়, কেউ এক সা’ আটা ও কেউ এক সা খেজুর দান করল। অবশেষে রাসূল সা. বললেন, অন্তত, এক টুকরা খেজুর হলেও নিয়ে আসো।

আনসার সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি একটি বিরাট থলি নিয়ে আসলেন। এর ভারে তার হাত অবশ হয়ে গেল। লোকেরা সারিবদ্ধভাবে একের পর এক দান করতে থাকল। ফলে খাবার ও কাপড়ের দু’টি স্তুপ হয়ে গেল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা মুবারক খাটি সোনার মতো উজ্জ্বল হয়ে গেল।

এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন উত্তম প্রথা বা কাজের প্রচলন করে সে তার এক কাজের সাওয়াব পাবে এবং তার পরে যারা তার এ কাজ দেখে তা করবে সে এর বিনিময়েও সওয়াব পাবে। তবে এতে তাদের সওয়াব কোন অংশে কমানো হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে (ইসলামের পরিপন্থী) কোন খারাপ প্রথা বা কাজের প্রচলন করবে, তাকে তার এ কাজের বোঝা (গুনাহ এবং শাস্তি) বহন করতে হবে। তারপর যারা তাকে অনুসরণ করে এ কাজ করবে তাদের সমপরিমাণ বোঝাও তাকে বইতে হবে। তবে এতে তাদের অপরাধ ও শাস্তি কোন অংশেই কমবে না। (মুসলিম, হাদিস : ২২২০)