সব ধরনের রোগ-ব্যাধি আল্লাহর সৃষ্টি। এসব দিয়ে তিনি মানুষকে পরীক্ষা করেন। তবে বিনিময়ে বিপুল সওয়াব দান করেন। তাই সওয়াব লাভে অসুস্থতা কামনা করতে হবে— এমনটা শরিয়তসম্মত নয়। বরং অসুস্থ হয়ে গেলে ধৈর্য্য ধরতে হবে। আর আল্লাহর কাছে সওয়াবের প্রত্যাশা করতে হবে।

মাথা ব্যাথা দূর করতে কী দোয়া পড়তে হবে অথবা কী আমল করতে হবে— তা কোরআন-হাদিসে বিশেষভাবে উল্লেখ নেই। তবে কোরআন-হাদিসের আলোকে আলেম-ওলামা ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন আমল নির্ণয় করেছেন। পাশাপাশি কিছু দোয়াও উল্লেখ করেছেন। সেগুলো অনুযায়ী আমল করলে মাইগ্রেনসহ মাথা ব্যথা দ্রুত উপশম হবে ইনশাআল্লাহ।

এক.

আয়াতুল কুরসি তিনবার পাঠ করা এবং পাশাপাশি নিন্মোক্ত দোয়াটি পড়া-

الله أكبر الله أكبر لا إله إلا الله والله أكبر الله أجل وأكبر مما أخاف وأحذر أعوذ بالله من عرقٍ نعار وأعوذ بالله من حر النار

উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আজাল্লু ওয়া আকবারু মিম্মা আখাফু ওয়া আহজারু, আউজুবিল্লাহি মিন ইরক্বি নাআর ওয়া আউজুবিল্লাহি মিন হার্রিন নার।

দুই.

قُل لَّوْ كَانَ مَعَهُۥٓ ءَالِهَةٌ كَمَا يَقُولُونَ إِذًا لَّٱبْتَغَوْاْ إِلَىٰ ذِى ٱلْعَرْشِ سَبِيلًا

উচ্চারণ : ক্বুল লাও কানা মাআহু আলিহাতুন কামা ইয়াক্বুলুউন, ইজাল লাবতাঘাও ইলা জিল আরশি সাবিলা।

অর্থ : ‘বলুন, যদি তাদের কথা মতো তার সঙ্গে আর কোনো উপাস্য থাকতো; তাহলে তারা আরশের মালিক পর্যন্ত পৌঁছার পথ খুঁজতো।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত : ৪২)

তিন.

إِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْاْ إِلَىٰ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَإِلَى ٱلرَّسُولِ رَأَيْتَ ٱلْمُنَٰفِقِينَ يَصُدُّونَ عَنكَ صُدُودًا

উচ্চারণ : ওয়া ইজা ক্বিলা লাহুম তাআলাও ইলা মা- আনযালাল্লাহু, ওয়া ইলার রাসুউলি রাআইতাল মুনাফিক্বিনা ইয়াসুদ্দুনা আনকা সুদুদা।

অর্থ : ‘আর যখন আপনি তাদের বলবেন, আল্লাহর নির্দেশের দিকে এসো- যা তিনি রাসুলের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন, তখন আপনি মুনাফিকদের দেখবেন, ওরা আপনার কাছ থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যাচ্ছে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৬১)

চার.

وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ وَلاَ يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إَلاَّ خَسَارًا

উচ্চারণ : ওয়া নুনায্যিলু মিনাল কুরআনি মা হুয়া শিফাউন, ওয়া রাহমাতুল লিল মুমিনিন। ওয়ালা ইয়াযিদুজ জালিমুনা ইল্লা খাসারা।

অর্থ : ‘আমি কোরআনে এমন বিষয় অবতীর্ণ করি, যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনদের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়।’ (সুরা বনি ইসরাইল, ৮২)

পাঁচ.

أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا ۖ وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ ۖ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ

উচ্চারণ : আওয়ালাম ইয়ারাল লাজিনা কাফারু, আন্নাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি কা-নাতা রাতক্বান ফাফাতাক্বনাহুমা; ওয়া জাআলনা মিনাল মা-ই ক্বুল্লা শাই-ইন হাই, আফালা ইয়ু’মিনুন।

অর্থ : ‘কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী- উভয়টি জমাটবদ্ধ ছিল, অতঃপর আমি উভয়টিকে আলাদা করে দিয়েছি এবং আমি পানি থেকে প্রতিটি কিছু প্রাণবহ সৃষ্টি করেছি। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না? (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৩০)

ছয়.

সুরা ফাতিহা পাঠ করা। কারণ, সুরা ফাতিহা সমগ্র রোগের মহৌষধ। বহু হাদিসে সুরা ফাতিহার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। তবে মাথা ব্যথায় এটি পড়ার নিয়ম হলো- মাথায় হাত রেখে তিনবার পড়া।