মানুষ হাসি-খুশি, আনন্দে মেতে থাকতে পছন্দ করে। দুঃখ, দুর্দশা, কান্না কেউ পছন্দ করে না। এসব থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা চালায় সবাই। হাসি-খুশি থাকা স্বাভাবিক। তবে হাসি-খুশির সঙ্গে আল্লাহ তায়ালার স্মরণ মনে রাখতে হবে। এবং পরকালে আল্লাহর সামনে দুনিয়ার প্রতিটি বিষয়ের হিসাবের জন্য অন্তরে ভয় থাকতে হবে। 

কারণ, সবাইকে আল্লাহর সামনে হিসাব দিতে হবে। এ থেকে কেউ পার পাবে না। আর হিসাব দিতে না পারলে ভয়াবহ পরিণতি হবে। এজন্য আল্লাহ তায়ালা কম হাসা এবং বেশি বেশি কান্না করার কথা বলেছেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে—

 فَلۡیَضۡحَكُوۡا قَلِیۡلًا وَّ لۡیَبۡكُوۡا كَثِیۡرًا ۚ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوۡا یَكۡسِبُوۡنَ

অতএব তারা অল্প হাসুক, আর বেশি কাঁদুক, তারা যা অর্জন করেছে তার বিনিময়ে। (সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ৮২)

আল্লাহর রাসূল সা.ও বিভিন্ন হাদিসে অন্তরে আল্লাহর ভয় রেখে কান্না করার কথা বলেছেন। যে ব্যক্তি পরকালে মহান আল্লাহর সামনে জবাবদিহি এবং কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে কান্না করবে তার কোনো কিছু হারানোর ভয় নেই। এমন ব্যক্তির জন্য পুরস্কার রয়েছে। এমন ব্যক্তির পুরস্কার সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন—

‘আল্লাহর ভয়ে কান্না করা ব্যক্তির জাহান্নামে যাওয়া অসম্ভব, যেমন দহন করা দুধের পুনরায় ওলানে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। আর আল্লাহর পথের ধুলা ও জাহান্নামের ধোঁয়া কখনো একত্র হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিসে : ১৬৩৩)

আর যে ব্যক্তি  আল্লাহর ভয়ে কান্না করবে তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। হজরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, ‘জাহান্নামের আগুন দুটি চোখ স্পর্শ করবে না। এক. যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কাঁদে এবং দুই. যে চোখ আল্লাহর রাস্তা পাহারা দিয়ে নির্ঘুম রাত কাটায়।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৬৩৯)

এমন ব্যক্তি আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া পাবে বলেও হাদিসে ঘোষণা করা হয়েছে । সাত শ্রেণির মানুষ সম্পর্কে রাসুল সা. বলেছেন, ‘তারা সেদিন আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া পাবে, যেদিন অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। সেই সাত শ্রেণির একটি শ্রেণি হলো, ‘যারা নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তাদের দুই চোখে অশ্রু ঝরতে থাকে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬০; মুসলিম, হাদিস : ৭১১)