বনী ইসরাঈল বা ইহুদি জাতির বিভিন্ন বদ অভ্যাসের কথা কোরআনের একাধিক আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে। সূরা মায়েদার ৪১-৪২ নম্বর আয়াতে একসঙ্গে ইহুদিদের অনিষ্টতা ও দুশ্চরিত্রের কিছু বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। তাদের সেই বদ অভ্যাসগুলোর একটি হলো—

মানুষকে মিথ্যা ও ভ্রান্ত কথাবার্তা শোনানো এবং শোনাতে অভ্যস্ত করা। তাদের পাদ্রিরা তাওরাত শরিফ বিকৃত করে যেসব বিধান ও অমূলক কিসসা-কাহিনী তাদের শোনাত, সাধারণ ইহুদিরা তা-ই মেনে নিত।

ইহুদিদের দ্বিতীয় বদ অভ্যাস

ইহুদিদের শ্রেণিভুক্ত মুনাফিকরা নবীজির যুগে গুপ্তচরবৃত্তিতে লিপ্ত থাকতো। ধর্ম অনুসরণের জন্য নয়, বরং প্রকৃতপক্ষে তারা বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি জেনে ইহুদিদের কাছে বলে দিত।

ইহুদিদের তৃতীয় বদ অভ্যাস

ইহুদিদের আরেকটি বদ অভ্যাস ছিল, ঐশী গ্রন্থের বিকৃতি সাধন। তারা আল্লাহর কালামকে যথার্থ স্থান থেকে সরিয়ে তার ভুল অর্থ করতো। আর আল্লাহর নির্দেশকে বিকৃত করতো। তারা আল্লাহর কালামের শব্দগত ও অর্থগত উভয় প্রকার বিকৃতিতেই অভ্যস্ত ছিল।

ইহুদিদের চতুর্থ বদ অভ্যাস

ইহুদিদের বদ অভ্যাস ছিল- ঘুষ ও উৎকোচ গ্রহণ।

পবিত্র কোরআনে ইহুদিদের স্বভাব সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে—

یٰۤاَیُّهَا الرَّسُوۡلُ لَا یَحۡزُنۡكَ الَّذِیۡنَ یُسَارِعُوۡنَ فِی الۡكُفۡرِ مِنَ الَّذِیۡنَ قَالُوۡۤا اٰمَنَّا بِاَفۡوَاهِهِمۡ وَ لَمۡ تُؤۡمِنۡ قُلُوۡبُهُمۡ ۚۛ وَ مِنَ الَّذِیۡنَ هَادُوۡا ۚۛ سَمّٰعُوۡنَ لِلۡكَذِبِ سَمّٰعُوۡنَ لِقَوۡمٍ اٰخَرِیۡنَ ۙ لَمۡ یَاۡتُوۡكَ ؕ یُحَرِّفُوۡنَ الۡكَلِمَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَوَاضِعِهٖ ۚ یَقُوۡلُوۡنَ اِنۡ اُوۡتِیۡتُمۡ هٰذَا فَخُذُوۡهُ وَ اِنۡ لَّمۡ تُؤۡتَوۡهُ فَاحۡذَرُوۡا ؕ وَ مَنۡ یُّرِدِ اللّٰهُ فِتۡنَتَهٗ فَلَنۡ تَمۡلِكَ لَهٗ مِنَ اللّٰهِ شَیۡئًا ؕ اُولٰٓئِكَ الَّذِیۡنَ لَمۡ یُرِدِ اللّٰهُ اَنۡ یُّطَهِّرَ قُلُوۡبَهُمۡ ؕ لَهُمۡ فِی الدُّنۡیَا خِزۡیٌ ۚۖ وَّ لَهُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ

سَمّٰعُوۡنَ لِلۡكَذِبِ اَكّٰلُوۡنَ لِلسُّحۡتِ ؕ فَاِنۡ جَآءُوۡكَ فَاحۡكُمۡ بَیۡنَهُمۡ اَوۡ اَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ ۚ وَ اِنۡ تُعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ فَلَنۡ یَّضُرُّوۡكَ شَیۡئًا ؕ وَ اِنۡ حَكَمۡتَ فَاحۡكُمۡ بَیۡنَهُمۡ بِالۡقِسۡطِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُقۡسِطِیۡنَ

হে রাসূল, তোমাকে যেন তারা চিন্তিত না করে, যারা কুফরে দ্রুত ছুটছে- তাদের থেকে, যারা তাদের মুখে বলে ‘ঈমান এনেছি’ কিন্তু তাদের অন্তর ঈমান আনেনি। আর যারা ইহুদি তারা মিথ্যা অধিক শ্রবণকারী, অন্যান্য কওমের প্রতি, যারা তোমার নিকট আসেনি তাদের পক্ষে তারা কান পেতে থাকে। তারা শব্দগুলোকে যথাযথ সুবিন্যস্ত থাকার পরও আপন স্থান থেকে বিকৃত করে। 

তারা বলে, ‘যদি তোমাদেরকে এটি প্রদান করা হয়, তবে গ্রহণ কর। আর যদি তা তোমাদেরকে প্রদান না করা হয়, তাহলে বর্জন কর’; আর আল্লাহ যাকে ফিতনায় ফেলতে চান, তুমি তার পক্ষে আল্লাহর বিরুদ্ধে কিছুরই ক্ষমতা রাখ না। 

এরাই হচ্ছে তারা, যাদের অন্তরসমূহকে আল্লাহ পবিত্র করতে চান না। তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহাআযাব। 

তারা মিথ্যার প্রতি অধিক শ্রবণকারী, হারামের অধিক ভক্ষণকারী। সুতরাং যদি তারা তোমার কাছে আসে, তবে তাদের মধ্যে ফয়সালা কর অথবা তাদেরকে উপেক্ষা কর আর যদি তাদেরকে উপেক্ষা কর, তবে তারা তোমার কিছু ক্ষতি করতে পারবে না, আর যদি তুমি ফয়সালা কর, তবে তাদের মধ্যে ফয়সালা কর ন্যয়ভিত্তিক। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যয়পরায়ণদেরকে ভালবাসেন। (সূরা মায়েদা, আয়াত : ৪১-৪২)