প্রতীকী ছবি

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল ছিলেন। তিনি মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিতেন। আল্লাহর রাসূল হলেও তিনি সাধারণ মানুষ ছিলেন। মানুষের মতোই জীবনযাপন করতেন, পানাহার করতেন। সাধারণ মানুষের মতোই স্বাভাবিক ছিল তাঁর জীবন। তবে পার্থক্য ছিল তাঁর ওপর আল্লাহর ওহী নাজিল হতো সাধারণ মানুষের ওপর ওহী নাজিল হতো না।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, 

 قُلۡ اِنَّمَاۤ اَنَا بَشَرٌ مِّثۡلُكُمۡ یُوۡحٰۤی اِلَیَّ اَنَّمَاۤ اِلٰـهُكُمۡ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ ۚ فَمَنۡ كَانَ یَرۡجُوۡا لِقَآءَ رَبِّهٖ فَلۡیَعۡمَلۡ عَمَلًا صَالِحًا وَّ لَا یُشۡرِكۡ بِعِبَادَۃِ رَبِّهٖۤ اَحَدً

বল, ‘আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। আমার নিকট ওহী প্রেরণ করা হয় যে, তোমাদের ইলাহই এক ইলাহ। সুতরাং যে তার রবের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার রবের ইবাদাতে কাউকে শরীক না করে’। (সূরা কাহাফ, আয়াত : ১১০)

রাসূল সা. সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করার বিভিন্ন বর্ণনা হাদিসে রয়েছে। হাদিসের কিতাব থেকে তাঁর পানাহার, ঘুমানো, ব্যবহার্য বিভিন্ন বস্তুর বর্ণনা পাওয়া যায়। এক হাদিসে তাঁর ব্যবহার্য পানপাত্রের বর্ণনা রয়েছে। তিনি কেমন গ্লাস বা পানপাত্রে পানি পান করতেন এ বিষয়ে ইমাম আহমদ রহ. ইয়াহইয়া ইবনে আদমের সূত্রে আসিম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন—

আমি হজরত আনাস রা.-এর কাছে একটি পানপাত্র দেখেছি, তা রূপার পাতে মোড়ানো ছিল। 

বুখারি আসিম আল আহওয়ালের সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি হজরত আনাস ইবনে মালিকের কাছে রাসূল সা.-এর পেয়ালা দেখেছি তা ফেটে যাওয়ার কারণে রূপার পাত দিয়ে মুড়িয়ে নিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেন, তা ছিল অনেক উৎকৃষ্ট কাঠের চওড়া ও উত্তম পানপাত্র। হজরত আনাস রা. বলেন, এই পাত্রে আমি একাধিকবার রাসূল সা.-কে পান করিয়েছি।

ইবনে সিরিন বর্ণনা করেছেন, এতে লোহার একটি কড়া সংযুক্ত ছিল। পরবর্তীতে হজরত আনাস রা. এতে স্বর্ণ বা রৌপ্যের কড়া সংযুক্ত করতে চাইলেন। তখন আবু তালহা রা. তাকে বললেন, রাসূল সা. -এর তৈরি কোনো বস্তু পরিবর্তন করো না। তখন আনাস রা. তার ইচ্ছা পরিত্যাগ করলেন।

ইমাম আহমদ রহ. রাওহ ইবনে উবাদা সূত্রে হাজ্জাজ ইবনে আনাস রা. থেকে বর্ণনা করেন, আমরা একবার হজরত আনাস রা.-এর কাছে ছিলাম। তখন তিনি একটি পানপাত্র আনলেন, যাতে তিনটি লোহার পাত এবং লোহার আংটা সংযুক্ত ছিল। তিনি একটি কালো গিলাফের (আবরণের) ভেতর থেকে তা বের করলেন।

এরপর আনাস ইবনে মালিকের নির্দেশে এতে পানি ভরে আমাদের জন্য আনা হলো। তখন আমরা তা থেকে পান করলাম এবং আমাদের মাথায় ও মুখে ঢেলে নিলাম  এবং দরুদ পড়লাম। (মুসনাদে আহমাদ, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৬/২৩)