সূরা মুলক বা সূরা আল-মুলক। পবিত্র কোরআনের ৬৭ তম সূরা। এই সূরার আয়াত সংখ্যা ৩০, রুকু ২টি। এই সূরা পবিত্র কোরআন শরিফের ২৯ নম্বর পারায়। সূরা আল-মুলক মক্কায় অবতীর্ণ হয়। সূরা মুলকের নামের অর্থ সার্বভৌম কর্তৃত্ব। 

সূরা মূলক পাঠের ফজিলত

সূরা মূলক পাঠের অনেক ফজিলত রয়েছে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা মূলক পাঠ করবে সে যাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা মূলক পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে কবরের আজাব থেকে বাঁচাবেন। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ)

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যে ব্যক্তি সূরা মূলক শিখে এবং নিজেদের স্ত্রী-সন্তানদের শেখাবে, এটা কবরের থেকে রক্ষা করবে এবং কেয়ামতের দিন এই সূরা পাঠকারির পক্ষে কথা বলে তাকে মুক্ত করবে (তিরমিজি, মুসতাদরাকে হাকেম)

সূরা মুলক

تَبٰرَکَ الَّذِیۡ بِیَدِہِ الۡمُلۡکُ ۫  وَہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرُۨ ۙ ١ الَّذِیۡ خَلَقَ الۡمَوۡتَ وَالۡحَیٰوۃَ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ  وَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡغَفُوۡرُ ۙ ٢ الَّذِیۡ خَلَقَ سَبۡعَ سَمٰوٰتٍ طِبَاقًا ؕ مَا تَرٰی فِیۡ خَلۡقِ الرَّحۡمٰنِ مِنۡ تَفٰوُتٍ ؕ فَارۡجِعِ الۡبَصَرَ ۙ ہَلۡ تَرٰی مِنۡ فُطُوۡرٍ ٣ ثُمَّ ارۡجِعِ الۡبَصَرَ کَرَّتَیۡنِ یَنۡقَلِبۡ اِلَیۡکَ الۡبَصَرُ خَاسِئًا وَّہُوَ حَسِیۡرٌ ٤ وَلَقَدۡ زَیَّنَّا السَّمَآءَ الدُّنۡیَا بِمَصَابِیۡحَ وَجَعَلۡنٰہَا رُجُوۡمًا لِّلشَّیٰطِیۡنِ وَاَعۡتَدۡنَا لَہُمۡ عَذَابَ السَّعِیۡرِ ٥ وَلِلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِرَبِّہِمۡ عَذَابُ جَہَنَّمَ ؕ وَبِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ٦ اِذَاۤ اُلۡقُوۡا فِیۡہَا سَمِعُوۡا لَہَا شَہِیۡقًا وَّہِیَ تَفُوۡرُ ۙ ٧ تَکَادُ تَمَیَّزُ مِنَ الۡغَیۡظِ ؕ کُلَّمَاۤ اُلۡقِیَ فِیۡہَا فَوۡجٌ سَاَلَہُمۡ خَزَنَتُہَاۤ اَلَمۡ یَاۡتِکُمۡ نَذِیۡرٌ ٨ قَالُوۡا بَلٰی قَدۡ جَآءَنَا نَذِیۡرٌ ۬ۙ فَکَذَّبۡنَا وَقُلۡنَا مَا نَزَّلَ اللّٰہُ مِنۡ شَیۡءٍ ۚۖ اِنۡ اَنۡتُمۡ اِلَّا فِیۡ ضَلٰلٍ کَبِیۡرٍ ٩ وَقَالُوۡا لَوۡ کُنَّا نَسۡمَعُ اَوۡ نَعۡقِلُ مَا کُنَّا فِیۡۤ اَصۡحٰبِ السَّعِیۡرِ ١۰ فَاعۡتَرَفُوۡا بِذَنۡۢبِہِمۡ ۚ فَسُحۡقًا لِّاَصۡحٰبِ السَّعِیۡرِ ١١ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَخۡشَوۡنَ رَبَّہُمۡ بِالۡغَیۡبِ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّاَجۡرٌ کَبِیۡرٌ ١٢ وَاَسِرُّوۡا قَوۡلَکُمۡ اَوِ اجۡہَرُوۡا بِہٖ ؕ اِنَّہٗ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ١٣ اَلَا یَعۡلَمُ مَنۡ خَلَقَ ؕ  وَہُوَ اللَّطِیۡفُ الۡخَبِیۡرُ ٪ ١٤ ہُوَ الَّذِیۡ جَعَلَ لَکُمُ الۡاَرۡضَ ذَلُوۡلًا فَامۡشُوۡا فِیۡ مَنَاکِبِہَا وَکُلُوۡا مِنۡ رِّزۡقِہٖ ؕ وَاِلَیۡہِ النُّشُوۡرُ ١٥ ءَاَمِنۡتُمۡ مَّنۡ فِی السَّمَآءِ اَنۡ یَّخۡسِفَ بِکُمُ الۡاَرۡضَ فَاِذَا ہِیَ تَمُوۡرُ ۙ ١٦ اَمۡ اَمِنۡتُمۡ مَّنۡ فِی السَّمَآءِ اَنۡ یُّرۡسِلَ عَلَیۡکُمۡ حَاصِبًا ؕ فَسَتَعۡلَمُوۡنَ کَیۡفَ نَذِیۡرِ ١٧ وَلَقَدۡ کَذَّبَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ فَکَیۡفَ کَانَ نَکِیۡرِ ١٨ اَوَلَمۡ یَرَوۡا اِلَی الطَّیۡرِ فَوۡقَہُمۡ صٰٓفّٰتٍ وَّیَقۡبِضۡنَ ؔۘؕ مَا یُمۡسِکُہُنَّ اِلَّا الرَّحۡمٰنُ ؕ اِنَّہٗ بِکُلِّ شَیۡءٍۭ بَصِیۡرٌ ١٩ اَمَّنۡ ہٰذَا الَّذِیۡ ہُوَ جُنۡدٌ لَّکُمۡ یَنۡصُرُکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ الرَّحۡمٰنِ ؕ  اِنِ الۡکٰفِرُوۡنَ اِلَّا فِیۡ غُرُوۡرٍ ۚ ٢۰ اَمَّنۡ ہٰذَا الَّذِیۡ یَرۡزُقُکُمۡ اِنۡ اَمۡسَکَ رِزۡقَہٗ ۚ بَلۡ لَّجُّوۡا فِیۡ عُتُوٍّ وَّنُفُوۡرٍ ٢١ اَفَمَنۡ یَّمۡشِیۡ مُکِبًّا عَلٰی وَجۡہِہٖۤ اَہۡدٰۤی اَمَّنۡ یَّمۡشِیۡ سَوِیًّا عَلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ٢٢ قُلۡ ہُوَ الَّذِیۡۤ اَنۡشَاَکُمۡ وَجَعَلَ لَکُمُ السَّمۡعَ وَالۡاَبۡصَارَ وَالۡاَفۡـِٕدَۃَ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تَشۡکُرُوۡنَ ٢٣ قُلۡ ہُوَ الَّذِیۡ ذَرَاَکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ وَاِلَیۡہِ تُحۡشَرُوۡنَ ٢٤ وَیَقُوۡلُوۡنَ مَتٰی ہٰذَا الۡوَعۡدُ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ٢٥ قُلۡ اِنَّمَا الۡعِلۡمُ عِنۡدَ اللّٰہِ ۪ وَاِنَّمَاۤ اَنَا نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ٢٦ فَلَمَّا رَاَوۡہُ زُلۡفَۃً سِیۡٓـَٔتۡ وُجُوۡہُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَقِیۡلَ ہٰذَا الَّذِیۡ کُنۡتُمۡ بِہٖ تَدَّعُوۡنَ ٢٧ قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ اَہۡلَکَنِیَ اللّٰہُ وَمَنۡ مَّعِیَ اَوۡ رَحِمَنَا ۙ فَمَنۡ یُّجِیۡرُ الۡکٰفِرِیۡنَ مِنۡ عَذَابٍ اَلِیۡمٍ ٢٨ قُلۡ ہُوَ الرَّحۡمٰنُ اٰمَنَّا بِہٖ وَعَلَیۡہِ تَوَکَّلۡنَا ۚ فَسَتَعۡلَمُوۡنَ مَنۡ ہُوَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ٢٩ قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ اَصۡبَحَ مَآؤُکُمۡ غَوۡرًا فَمَنۡ یَّاۡتِیۡکُمۡ بِمَآءٍ مَّعِیۡنٍ ٪ ٣۰

সূরা মুলকের বাংলা উচ্চারণ : 

১. তাবা-রা-কাল্লাজি বিয়া-দিহিল মূলকু ওয়া-হুয়া ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন কাদির।

২. আল্লাজি খালাকাল মাওতা ওয়াল হায়া-তা লি-ইয়াব-লু-ওয়াকুম আই-য়ুকুম আহছানু‘ আমালা- ওয়া হুওয়াল ‘আজিজুল গাফুর।

৩. আল্লাজি খালাকা ছাব‘আ ছামা-ওয়া-তিন তিবা-কা মা- তারা- ফি খালকির রাহমা-নি মিন তাফা-উত ফারজি‘ইল বাসারা হাল তারা- মিন ফুতুর।

৪. ছুম্মার জি’ইলবাসা-রা কাররা-তাইনি ইয়ান-কালিব ইলাই-কাল বাসারু খা-ছিআওঁ ওয়া হুয়া হাসির।

৫. ওয়া লাকাদ জাইয়ান্নাছ সামাআদ্দুনইয়া- বিমাসা-বিহা ওয়াযা’আলনা- হা- রুজুমাল লিশ-শায়াতিনি ওয়া আ’তাদনা- লাহুম ‘আযা- বাছছা’ঈর।

৬. ওয়া লিল্লা-জিনা কাফারু-বিরাব্বিহিম ‘আযা- বু-যাহান্নাম, ওয়া-বি’ছাল মাসির।

৭. ইজা-উলকু-ফিহা- ছামি’উ লাহা- শাহি-কাওঁ ওয়াহিয়া তাফুর।

৮. তাকা- দু-তামাই-য়াজু-মিনাল গাইজ, কুল্লামা-উলকিয়া ফিহা- ফাওজুন ছাআলাহুম খাজানাতুহা-আলাম ইয়া’তিকুম নাজির।

৯. কা-লু-বালা- কাদ যাআনা- নাজিরুন ফাকাজ-যাবনা- ওয়া কুলনা- মানাজযালাল্লা- হু মিন শাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা- ফি দালা- লিন কাবির।

১০. ওয়া-কা-লু-লাও কুন্না- নাছমা’উ আও না’কিলুমা- কুন্না-ফি-আসহা-বিছছা’ঈর।

১১. ফা’তারাফু-বিজাম-বিহিম ফাছুহ-ক্বললিআসহা-বিছ ছা’ঈর।

১২. ইন্নাল্লাজিনা ইয়াখশাওনা রাব্বাহুম বিলগাইবি লাহুম মাগফিরাতুওঁ ওয়া আজরুন কাবির।

১৩. ওয়া আছিররু-কাওলাকুম আবিজ-হারুবিহি ইন্নাহু’আলিমুম বিজা- তিসসুদুর।

১৪. আলা- ইয়া’লামু-মান খালাক, ওয়া হুওয়াল্লাতিফুল খাবির।

১৫. হুওয়াল্লাজি যা’আলা লাকুমুল আরদা যালুলান ফামশু-ফি মানা-কিবিহা- ওয়া কুলু-মির রিজকিহি ওয়া ইলাইহিন নুশুর।

১৬. আ-আমিনতুম মান ফিছছামাই আইঁ ইয়াখ-ছিফা বিকুমুল আরদা ফাইযা- হিয়া তামুর।

১৭. আম আমিন-তুম মান ফিছছামাই আইঁ ইউরছিলা ‘আলাইকুম হা-সিবান ফাছা-তা’লামুনা কাইফা নাজির।

১৮. ওয়া লাকাদ কাজ-যাবাল্লাজিনা মিন কাবলিহিম ফাকাইফা কা-না নাকির।

১৯. আওয়ালাম ইয়ারাও ইলাত্তাইরি ফাওকাহুম সাফফা-তিওঁ ওয়াইয়াকবিদন । মাইউমছিকুহুন্না ইল্লার-রাহমা-নু ইন্নাহুবিকুল্লি শাইয়িম বাসির।

২০. আম্মান হা-যাল্লাজি হুওয়া জুনদুল্লাকুম ইয়ানসুরুকুম মিন দু নির-রাহমা-নি ইনিল কাফিরুনা ইল্লা- ফি গুরুর।

২১. আম্মান হা-যাল্লাজি ইয়ার-জুকুকুম ইন আমছাকা রিজকাহু বাল্লাজজুফি ‘উতুওবিওয়া নুফুর।

২২. আ-ফা-মাইঁ ইয়ামশি মুকিব্বান ‘আলা- ওয়াজহিহি আহদা আম্মাইঁ ইয়ামশি ছাবি ইয়ান ‘আলা-সিরা-তিমমুছতাকিম।

২৩. কুল হুওয়াল্লাজি-আনশাআকুম ওয়া যা‘আলা লাকুমুছ-ছাম‘আ ওয়াল আবসা-রা ওয়াল আফইদা কালিলাম মা-তাশকুরুন।

২৪. কুল হুওয়াল্লা-জি যারাআকুম ফিল আরদি-ওয়া ইলাইহি তুহশারুন।

২৫. ওয়া-ইয়া-কুলুনা মাতা-হা-যাল ওয়া’দু-ইন কুনতুম সা-দিকিন।

২৬. কুল ইন্নামাল ‘ইলমু’-ইনদাল্লা- হি ওয়া-ইন্নামা-আনা নাজিরুম মুবিন।

২৭. ফালাম্মা-রা-আওহু ঝুলফাতান সিআত ঊজু-হুল্লাজিনা কাফারু-ওয়া কিলা হা-যাল্লাজি কুনতুম বিহি তাদ্দা’ঊন।

২৮. কুল আরা-আইতুম ইন আহলাকা-নিয়াল্লা-হু ওয়া মাম্মা‘ইয়া আও রাহিমানা- ফামাইঁ ইউজিরুল কা-ফিরিনা মিন ‘আযা-বিন আলিম।

২৯. কুল হুওয়ার-রাহমা-নু-আ-মান্না-বিহি ওয়া’আলাইহি তাওয়াক্কালনা-, ফাছাতা’লামুনা মান হুওয়া ফি দালা-লিম মুবিন।

৩০. কুল আরা-আইতুম ইন আসবাহা মাউকুম গাওরান ফামাইঁ ইয়া’তিকুম বিমাইম মা’ঈন। (মাখরাজসহ উচ্চারণ শিখে নেওয়া জরুরি)।

সুরা মূলক বাংলা অর্থ

১. বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত। আর তিনি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।

২. যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদের পরিক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালি, অতিশয় ক্ষমাশীল।

৩. যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোনো অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোনো ত্রুটি দেখতে পাও কি?

৪. অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।

৫. আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপ দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আজাব।

৬. আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে যাহান্নামের আজাব। আর কতই না নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল!

৭. যখন তাদের তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে।

৮. ক্রোধে তা ছিন্ন ভিন্ন হওয়ার উপক্রম হবে। যখনই তাতে কোনো দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তার প্রহরিরা তাদের জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের নিকট কি কোনো সতর্ককারি আসেনি’?

৯. তারা বলবে, ‘হ্যা, আমাদের নিকট সতর্ককারি এসেছিল। তখন আমরা (তাদের) মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করেছিলাম এবং বলেছিলাম, ‘আল্লাহ কিছুই নাজিল করেননি। তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছ’।

১০. আর তারা বলবে, ‘যদি আমরা শুনতাম অথবা বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসিদের মধ্যে থাকতাম না’।

১১. অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। অতএব, ধ্বংস জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসিদের জন্য।

১২. নিশ্চয়ই যারা তাদের রবকে না দেখেই ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় প্রতিদান।

১৩. আর তোমরা তোমাদের কথা গোপন করো অথবা তা প্রকাশ করো, নিশ্চয়ই তিনি অন্তরসমূহে যা আছে সে বিষয়ে সম্যক অবগত।

১৪. যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি যানেন না? অথচ তিনি অতি সূক্ষ্মদর্শী, পূর্ণ অবহিত।

১৫. তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তাঁর নিকটই পুনরুত্থান।

১৬. যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদেরসহ জমিন ধসিয়ে দেওয়া থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, অতঃপর আকস্মিকভাবে তা থর থর করে কাঁপতে থাকবে।

১৭. যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের ওপর পাথর নিক্ষেপকারি ঝোড়ো হাওয়া পাঠানো থেকে তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ, তখন তোমরা যানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী?

১৮. আর অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীরাও অস্বীকার করেছিল। ফলে কেমন ছিল আমার প্রত্যাখ্যান (এর শাস্তি)?

১৯. তারা কি লক্ষ্য করেনি তাদের উপরস্থ পাখিদের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও গুটিয়ে নেয়? পরম করুণাময় ছাড়া অন্য কেউ এদের স্থির রাখে না। নিশ্চয়ই তিনি সব কিছুর সম্যক দ্রষ্টা।

২০. পরম করুণাময় ছাড়া তোমাদের কি আর কোনো সৈন্য আছে, যারা তোমাদের সাহায্য করবে? কাফিররা শুধু তো ধোঁকায় নিপতিত।

২১. অথবা এমন কে আছে, যে তোমাদের রিজিক দান করবে যদি আল্লাহ তাঁর রিজিক বন্ধ করে দেন? বরং তারা অহমিকা ও অনীহায় নিমজ্জিত হয়ে আছে।

২২. যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখের ওপর ভর দিয়ে চলে সে কি অধিক হেদায়াতপ্রাপ্ত না কি সেই ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে?

২৩. বলো, ‘তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তকরণসমুহ দিয়েছেন। তোমরা খুব অল্পই শোকর করো’।

২৪. বলো, ‘তিনিই তোমাদের জমিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর কাছেই তোমাদের সমবেত করা হবে’।

২৫. আর তারা বলে, ‘সে ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।

২৬. বলো, ‘এ বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই নিকট। আর আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’।

২৭. অতঃপর তারা যখন তা আসন্ন দেখতে পাবে, তখন কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে এবং বলা হবে, ‘এটাই হলো তা, যা তোমরা দাবি করছিলে’।

২৮. বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি’? যদি আল্লাহ আমাকে এবং আমার সঙ্গে যারা আছে, তাদের ধ্বংস করে দেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তাহলে কাফিরদের যন্ত্রণাদায়ক থেকে কে রক্ষা করবে’?

২৯. বলো, ‘তিনিই পরম করুণাময়। আমরা তাঁর প্রতি ইমান এনেছি এবং তাঁর ওপর তাওয়াক্কুল করেছি। কাজেই তোমরা অচিরেই যানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে’?

৩০. বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কী, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদের বহমান পানি এনে দিবে’? (সূরা মুলক, আয়াত : ১-৩০)