প্রিয়নবী সা. রাস্তায় হাঁটতেন যেভাবে
হজরত আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি সা. যখন পথ চলতেন তখন মনে হতো তিনি যেন (লাঠি কিংবা অন্য কোনো জিনিসের ওপর) ভর দিয়ে পথ চলছেন। (অর্থাৎ, তিনি সামনের দিকে ঝুঁকে পথ চলতেন।) (আখলাকুন্নবী সা. ২০২)
আরেক হাদিসে হজরত আসিম ইবনে লাকীত ইবনে সাবুরা রা. তার বাবার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি (হজরত আসিমের বাবা) হজরত আয়েশা রা.-এর কাছে গেলেন। এ সময় তিনি ও তাঁর এক সাথী মিলে রাসূল সা.-কে খুঁজছিলৈন। কিন্তু তারা নবী সা.-কে উপস্থিত পাননি। তারা কিছুক্ষণ পরেই নবী সা.-কে এমন অবস্থায় আগমন করতে দেখলেন যেন তিনি মাটিতে পা টেনে চলার পরিবর্তে মাটি থেকে পা তুলে সামনের দিকে হালকা ঝুঁকে হাঁটছেন। (আখলাকুন্নবী সা., হাদিস : ২০৪)
বিজ্ঞাপন
হজরত আলী ইবনে আবু তালিব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি সা.-এর নিয়ম ছিলো তিনি যখন পথ চলতেন, তখন সামনের দিকে ঝুঁকে ঝুঁকে চলতেন। (দেখে মনে হতো) তিনি যেন ঢালু জায়গার দিকে নামছেন। আমি তাঁর মতো গুণাবলি সম্পন্ন মানুষ না আগে দেখেছি না পরে দেখেছি। (আখলাকুন্নবী, হাদিস : ২০৬)
আরও পড়ুন
হজরত রাবীয়া রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা হজরত আনাস ইবনে মালিক রা. এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে নবীজি সা.-এর অনুপম গুণাবলি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। উত্তরে তিনি বললেন, রাসূল সা. যখন পথ চলতেন তখন তিনি যেন কোনো ঢালু ভূমি দিয়ে চলছেন। (অর্থাৎ, চলার পথে তাঁর হাঁটার গতি ছিল কিছুটা দ্রুত।)
এই হাদিসগুলোতে রাসূল সা.-এর পথ চলার পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। এই হাদিসের বর্ণনামতে বুঝা যায়, রাসূল সা.-এর পথ চলার মধ্যে তিন ধরনের বৈশিষ্ট্য ছিলো—
১. তিনি নম্রতা অবলম্বনের জন্য সামনের দিকে ঝুঁকে চলতেন। অহংকারসুলভ বুকটান করে হাঁটতেন। (তবে যুদ্ধের ময়দানে মুজাহিদদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম রয়েছে। কারণ, তাদের ব্যাপারে নির্দেশ হলো কাফেরদের মুকাবিলায় বিনয় ও নম্রতার প্রকাশ নয়, বরং নিজেদের শক্তি, বীরত্ব ও অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার প্রকাশ করা আবশ্যক।)
২. নবীজি সা. পথ চলার সময় মাটি থেকে পা তুলে তুলে সবল পুরুষের মতো হাঁটতেন। আলস ও খোঁড়ার মতো মাটিতে পা টেনে চলতেন না। কারণ, এটা অপছন্দনীয় ও দোষের।
৩. তিনি তুলনামূলকভাবে দ্রুত চলতেন। খুব ধীর গতিতে অলসের মতো হাঁটতেন না।