ফেরেশতারা আল্লাহর এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। তারা কখনো আল্লাহ তায়ালার আদেশ পালন থেকে বিচ্যুত হন না। আল্লাহর আদেশ পালন ও ইবাদত বন্দেগীতে লিপ্ত থাকাই তাদের মূল কাজ। তারা কখনো আল্লাহর অবাধ্য হন না।

পৃথিবীতে মানুষ যেভাবে কাবা শরীফকে ঘিরে ইবাদত-বন্দেগী ও তাওয়াফ করেন, আসমানেও ফেরেশতারা একটি ঘরকে ঘিরে আল্লাহর ইবাদত করেন, নামাজ পড়েন, তাওয়াফ করেন। এই ঘর বা মসজিদটিকে বায়তুল মামুর বলা হয়। এই মসজিদ সম্পর্কে হজরত আলী ইবনে আবু তালিব রা. বলেন—

এই মসজিদটি আকাশে অবস্থিত যুরাহ নামক একটি মসজিদ। কাবার ঠিক বরারব ওপরে তার অবস্থান। পৃথিবীতে বায়তুল্লাহর মর্যাদা যতটুকু আকাশে তার মর্যাদাও ঠিক ততটুকু। প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা এতে নামাজ আদায় করেন, তারা দ্বিতীয়বার আর কখনো সেখানে আসেন না। 

ইমাম তাবরানী রহ. আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.-এর সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সা. বলেছেন, বায়তুল মামুর আকাশে অবস্থিত। তাকে যুরাহ নামে অভিহিত করা হয়। বায়তুল্লাহর ঠিক বরাবর উপরে তার অবস্থান। উপর থেকে পড়ে গেলে তা ঠিক বায়তুল্লাহর ওপরই এসে পড়বে। প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা এতে প্রবেশ করেন। এরপর তারা আর তাতে প্রবেশ করেন না। পৃথিবীতে মক্কার মর্যাদা যতটুকু আকাশে তার মর্যাদা ঠিক ততটুকু। 

রাসূল সা. মিরাজের রাতে বায়তুল মামুর পরিদর্শন করেছেন। হাদিসে এসেছে, তিনি বলেছেন, ‘এরপর আমরা সপ্তম আকাশে এলাম। আমাকে বায়তুল মামুর দেখানো হলো। আমি জিবরাইলকে এটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এটি বায়তুল মামুর। এখানে প্রতিদিন ৭০ হাজার ফেরেশতা নামাজ আদায় করেন। যখন তাঁরা বেরিয়ে যান, এরপর কিয়ামত পর্যন্ত আর ফিরে আসতে পারেন না।’ (বুখারি: ৩২০৭) 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বায়তুল মামুরের আলোচনা তুলে ধরেছেন। সুরা তুরের শুরুতে আল্লাহ তায়ালা কয়েকটি বিষয়ের শপথ করেছেন। এর মধ্যে একটি বায়তুল মামুর। বর্ণিত হয়েছে, ‘কসম তুর পর্বতের, প্রশস্ত পত্রে লিখিত কিতাবের, বায়তুল মামুরের, সুউচ্চ ছাদের ও উত্তাল সমুদ্রের, তোমার পালনকর্তার শাস্তি অনিবার্য; তা কেউ প্রতিরোধ করতে পারবে না।’ (সুরা তুর: ১-৮)