সাহাবি আবু জার রা.-কে যে উপদেশ দিয়েছিলেন রাসূল সা.
জীবন গঠনে মহানবী সা. সাহাবিদেরকে বিভিন্ন সময় প্রয়োজনীয় অনেক উপদেশ দিতেন। এই উপদেশগুলো নবীজির যুগ পেরিয়ে এতো বছর পরও উম্মতে মুহাম্মদীর জীবন গঠনে প্রভাবক। বর্তমানেও উপদেশগুলোর আবেদন রয়ে গেছে একই রকম। মনে হবে যেন রাসূল সা. বর্তমান পরিস্থিতিকে দেখেই এই হাদিস বা উপদেশ বর্ণনা করেছেন।
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু জার গিফারী রা.-কে উদ্দেশ্য করে মহানবী সা. বেশ কিছু উপদেশ দিয়েছিলেন। এখানে তা তুলে ধরা হলো—
বিজ্ঞাপন
অসহায় ও নিঃস্বের প্রতি ভালোবাসা
হজরত আবু জার গিফারি রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. আমাকে আদেশ করেছেন আমি যেন নিঃস্ব, দরিদ্র, ও অসহায়দের ভালোবাসি, তাদের কাছে যাই, তাদের সাথে মিশি, তাদের সাহায্য সহযোগিতা করি।
নিচের দিকে তাকাবে, উপরের দিকে নয়
হজরত আবু জার গিফারি রা. বলেন, মহানবী সা. আমাকে বলেছেন, আমি যেন আমার নিচের দিকে অর্থাৎ আমার থেকে যারা অর্থনৈতিক, প্রভাব-প্রতিপত্তি ইত্যাদি দিক দিয়ে নিচে আমি যেন তাদের দিকে তাকাই। সম্পদে, মান-সম্মানে, ক্ষমায়, প্রভাব-প্রতিপত্তিতে যারা আমার উপরে তাদের দিকে যেন না তাকাই। কেননা, উপরের স্তরের লোকদের দিকে তাকালে মনে খারাপ লাগবে। কিন্তু নিম্নস্তরের লোকদের দিকে তাকালে মনে প্রশান্তি আসবে। তখন মনে হবে আমার চেয়ে অসহায়, দুর্বল, দরিদ্র ও নিম্নস্তরের লোকও আছে। আল্লাহ তাদের চেয়ে আমাকে যে ভালো রেখেছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া।
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে
হজরত আবু জার গিফারি রা: বলেন, মহানবী সা. আমাকে আদেশ করেছেন, আমি দূরে থাকলেও যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখি। কেননা, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা কবিরা গুনাহ। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়দের সম্পর্কে সতর্ক হও। অর্থাৎ রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তা ছিন্ন করো না।’ (সূরা নিসা-১) মহানবী সা: বলেছেন, ‘রক্তের সম্পর্ক ছিন্নকারী কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ বুখারি, মুসলিম)
কারো কাছে কোনো কিছু চাইবে না
মহানবী সা. হজরত আবু জার গিফারি রা.-কে বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কারো কাছে কোনো কিছু চাইবে না। এমনকি জুতার ফিতাও কারো কাছে চাইবে না। সূরা ফাতিহায় আমরা বলি- আমরা আপনারই ইবাদত করি এবং আপনার কাছেই সাহায্য চাই। মুমিনের আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে কোনো কিছু চাওয়া উচিত নয়।’
সবসময় সত্য বলবে
মহানবী সা. হজরত আবুজার গিফারি রা.-কে বলেছেন, ‘তিক্ত হলেও সদা সত্য কথা বলবে।’ সত্যের বিপরীত হলো মিথ্যা। মিথ্যা হলো সব পাপের মূল। তাই সত্য ও হক অনুযায়ী আমল করতে হবে; মিথ্যা ও বাতিল পরিহার করতে হবে।