একজন মুসলমানের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআন। আর কোরআনে জীবনের প্রত্যেকটি সমস্যার সমাধান জানানো হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা মানব জীবনের অন্যতম সফলতা ও উদ্দেশ্য হিসেবে তার ইবাদতকে নির্ধারণ করেছেন বলে কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে, আমি মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছি আমার ইবাদতের জন্য। (সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত : ৫৬)

এই আয়াতে আল্লাহ তাঁর বিধিগত (শরয়ী) ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেছেন, যা তিনি ভালবাসেন ও চান। আর তাহল, সমস্ত মানুষ ও জিন শুধু এক আল্লাহর ইবাদত করবে এবং আনুগত্যও শুধু তাঁরই করবে।

অর্থাৎ, এই আয়াতে সকল মানুষ ও জ্বিনকে জীবনের সেই উদ্দেশ্যের কথা স্মরণ করানো হয়েছে, যেটাকে তারা ভুলে গেলে পরকালে কঠোরভাবে জিজ্ঞাসিত হবে এবং এই পরীক্ষায় তারা অসফল গণ্য হবে, যাতে মহান আল্লাহ তাদেরকে ইচ্ছা ও এখতিয়ারের স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছেন।

বর্তমানে মানুষ আল্লাহর ইবাদত থেকে অনেক দূরে। পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন কারণে ইবাদত বিমুখ মানুষ অনেক সময় ইবাদতে ফিরতে চান। কিন্তু অল্প কিছু সময় ইবাদত করার পর আবারো পূর্বের মতো ইবাদতহীনতায় ফিরে যান। এ কারণে অনেকেই ভেবে থাকেন, পুরোপুরি ইবাদতের মতো সময় পেলে তখন ইবাদত শুরু করবো, সামান্য অথবা অল্প সময় ইবাদত করে কী হবে! 

এমন ধারণা করা বা এমন ধারণার কারণে অল্প-স্বল্প ভালো কাজ বা ইবাদত করা থেকে বিরত থাকা অনুচিত। কারণ, আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে যেমন তার বিপুল পরিমাণ ইবাদতের বিনিময়ে পরকালে পুরস্কার দেবেন। ঠিক একইভাবে তার অল্প ও অণু পরিমাণ ইবাদতের জন্যও পুরস্কার দেবেন। এজন্য সামান্য পরিমাণ ইবাদতও অবহেলায় ছাড়া যাবে না। 

এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন—

 فَمَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ خَیۡرًا یَّرَهٗ ؕ

কেউ অণু পরিমাণ সৎকাজ করলে সে তা দেখবে। (সূরা যিলযাল, আয়াত : ৭)

আর যারা নেক আমল করেন আল্লাহ তায়ালা তাদের আমলের সওয়াব কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ আমলকারীর জন্য নেক কাজের প্রতিদান ১০ গুণ বৃদ্ধি করে দেন। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘কেউ কোনো সৎকাজ করলে সে তার ১০ গুণ পাবে।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১৬০)

কখনো কেউ আল্লাহ নেক কাজের প্রতিদান ৭০০ গুণ বা তার চেয়েও বেশি বৃদ্ধি করেন। আল্লাহ বলেন, ‘যারা নিজেদের সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে তাদের উপমা হলো একটি শস্যবীজ, যা সাতটি শীষ উৎপাদন করে, প্রতিটি শীষে ১০০ শস্যদানা থাকে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় সর্বজ্ঞ।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ২৬১)