রাসূল সা. মদিনায় হিজরতের পর সর্বপ্রথম মসজিদ নির্মাণের কাজ করেন। মসজিদ নির্মাণ শেষে তিনি পবিত্র সহধর্মীনীদের জন্য কামরা বা বসবাসের জন্য ঘর নির্মাণ করেন। প্রথমে দুটি ঘর নির্মাণ করেন। একটি হজরত সাওদা বিনতে আমাআ রা.-এর জন্য। অপরটি হজরত আয়েশা রা.-এর জন্য।

অন্যান্য সহধর্মীনীদের জন্য পর্যায়ক্রমে প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন সময় ঘর নির্মাণ করা হয়। এই ঘরগুলো মসজিদে নববীর কাছেই ছিল।

মসজিদে নববীর পাশেই হজরত হারিসা ইবনে নুমান আনসারী রা.-এর বাড়ি ছিল, তার বাড়িতে অনেকগুলো ঘর ছিল। রাসূল সা.-এর প্রয়োজন হলে তিনি রাসূল সা.-কে সেখান থেকে একটি করে ঘর হাদিয়া দিতেন। এভাবে একের পর একটি ঘর তিনি রাসূল সা.-কে হাদিয়া দেন।

এই ঘরগুলো ছিল খেজুরের ডালের তৈরি। কিছু কিছু ঘর ছিল কাঁচা ইটের, দরজায় কম্বল বা চটের পর্দা ছিল। ঘরগুলোতে অল্পে তুষ্টি ও অস্থায়ী দুনিয়ার বাস্তব প্রতিচ্ছবি দেখা মিলতো। এই ঘরগুলোতে অধিকাংশ সময় বাতি জ্বলতো না এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও সব সময় পাওয়া যেতো না। (বুখারি, ১/৫৬)

হজরত হাসান বসরী রহ. বলেন, আমি যখন কিছুটা বড় হলাম, হাত দিয়ে এই হুজরাগুলোর ছাদ স্পর্শ করতাম। এই ‍হুজরাগুলো পূর্বমুখী এবং সিরিয়ার দিকে ছিল, পশ্চিমদিকে কোনো হুজরা ছিল না। (খুলাসাতুল ওফা)।

রাসূল সা.-এর সহধর্মীনীদের ইন্তিকালের পর উমাইয়া খলিফা ওলীদ ইবনে আব্দুল মালিকের নির্দেশে এই কামরাগুলো মসজিদে নববীর অর্ন্তভুক্ত করা হয়। যখন ওলীদের এ নির্দেশ মদিনায় পৌঁছল মদিনাবাসী এ নির্দেশ সহজেই মেনে নেননি।

আবু উমামা সাহল ইবনে হুনায়ফ বলেছেন, রাসূল সা.-এর সহধর্মীনীদের কামরাগুলো যদি ওভাবেই রেখে দেওয়া হতো, তাহলে মানুষ দেখতে পেতো আল্লাহ পুরো পৃথিবীর সম্পদের চাবি যে নবীর হাতে দিয়েছিলেন, সেই নবী কেমন কামরা ও ছাপড়ায় জীবনযাপন করতেন। সেই নবী, তাঁর সন্তান-সন্তুতি, তাঁর সহধর্মীনী ও সাহাবিদের ওপর আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। (সীরাতে মুস্তফা সা. ১/৩৬৪)