সন্তানের জন্য যে দোয়া করবেন
সন্তানের জন্য মা-বাবার দোয়ার বিকল্প হয় না। তাদের জন্য কল্যাণকর দোয়া করা মা-বাবার নিত্য-নৈমিত্তিক দায়িত্ব। তাদের কল্যাণে যেকোনো দোয়া করা যায়। তবে পবিত্র কোরআন-হাদিসে সন্তানের জন্য কী কী দোয়া করা যায়, তার অনেক বর্ণনা রয়েছে। দোয়াগুলো সন্তানের জন্য অনেক কার্যকরী ও সবিশেষ তাৎপর্যবহ।
পাঠকদের সুবিধার্থে এর কয়েকটি উল্লেখ করা হলো—
বিজ্ঞাপন
সন্তান উত্তম হওয়ার দোয়া
আদর্শ, সৎ-নিষ্ঠাবান ও উত্তম সন্তানের প্রত্যাশা সবার থাকে। তাই মা-বাবারও উচিত এমন সন্তানের জন্য দোয়া করা। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,
رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ
হে আমার প্রতিপালক! আমাকে নেককার সন্তান দিন।
(সুরা সফফাত, আয়াত : ১০০)
দেশ-ভূমির নিরাপত্তা প্রার্থনা
মা-বাবা সন্তানের নিরাপত্তার জন্য দোয়া করবে। পাশাপাশি সন্তান যে দেশে বসবাস করে, সে দেশের নিরাপত্তা কামনা করেও দোয়া করবে। আল্লাহ বলেন,
وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّ اجْعَلْ هَـذَا الْبَلَدَ آمِنًا وَاجْنُبْنِي وَبَنِيَّ أَن نَّعْبُدَ الأَصْنَامَ
‘যখন ইবরাহিম বলেছিল, হে আমার পালনকর্তা! এ নগরকে নিরাপদ-শান্তিময় করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তানদের মূর্তি-প্রতিমা পূজা থেকে দূরে রাখুন।’
(সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩৫)
নিরাপদ জীবিকার দোয়া করা
সন্তানের উত্তম জীবিকা মা-বাবার সবসময়ের কামনা। তাই তাদের জীবন যেন শঙ্কামুক্ত ও সমৃদ্ধ হয়— সেই দোয়া করা চাই। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
رَّبَّنَا إِنِّي أَسْكَنتُ مِن ذُرِّيَّتِي بِوَادٍ غَيْرِ ذِي زَرْعٍ عِندَ بَيْتِكَ الْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيمُواْ الصَّلاَةَ فَاجْعَلْ أَفْئِدَةً مِّنَ النَّاسِ تَهْوِي إِلَيْهِمْ وَارْزُقْهُم مِّنَ الثَّمَرَاتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ
‘হে আমার প্রতিপালক! আমি আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করালাম অনুর্বর উপত্যকায় আপনার পবিত্র ঘরের কাছে; হে আমাদের প্রতিপালক! এ জন্য যে তারা যেন নামাজ কায়েম করে। অতএব কিছু লোকের অন্তর তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে দিন এবং ফল-ফলাদি দিয়ে তাদের জীবিকা দান করুন, যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।’
(সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩৭)
শয়তান থেকে মুক্তির দোয়া
সন্তানের অকল্যাণ কোনো মা-বাবাই কামনা করে না। তাই মা-বাবা আবশ্যিকভাবে সন্তান অকল্যাণ থেকে দূরে থাকার দোয়া করবে। বিশেষত শয়তানের প্ররোচনা, মানুষের কুদৃষ্টি ও সব ধরনের অনিষ্ট-মন্দ থেকে বেঁচে থাকার দোয়া করবে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, মহানবী (সা.) হাসান-হুসাইন (রা.)-এর জন্য আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতেন এভাবে—
أعوذ بكلمات الله التامة من كل شيطان وهامة ومن كل عين لامة
উচ্চারণ : আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়তানিঁও ওয়া হাম্মাহ; ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মা।
আমি তোমাদের দুজনের জন্য আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালেমাগুলোর মাধ্যমে প্রত্যেক শয়তান ও বিষাক্ত প্রাণী থেকে এবং সর্বপ্রকার কুদৃষ্টি থেকে মুক্তি কামনা করছি।
(সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৭৩৭)
দ্বীনদারিতে যত্নবান হওয়ার দোয়া
সন্তান যেন দ্বীনদার হয় এবং উদাসীন না হয়— সে জন্য দোয়া করতে হবে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,
উচ্চারণ : রাব্বিজ আলনি মুকিমাস সালাতি ওয়ামিন জুররিয়্যাতি, রাব্বানা ওয়া তাকাব্বাল দুয়া।
অর্থ : সে আমার প্রতিপালক! আমাকে নামাজ আদায়কারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও। হে আমার প্রতিপালক! আমার প্রার্থনা কবুল করুন। (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৪০)
ঢাকা পোস্টের ইসলাম পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। জীবনঘনিষ্ঠ প্রশ্ন ও বিষয়ভিত্তিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ পাঠাতে মেইল করুন: dhakapostislam@gmail.com