অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণ ও দপ্তর বণ্টন হয়েছে ইতোমধ্যে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন দেশের অন্যতম ইসলামি ব্যক্তিত্ব ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনিই প্রথম আলেম হিসেবে সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ধর্মমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ধর্ম, ইসলাম ও ধর্মীয় সম্প্রীতির সঠিক চিত্র তুলে ধরতে তিনি অবদান রাখবেন বলে প্রত্যাশা অনেকের। 

ধর্মীয় অঙ্গন নিয়ে মানুষের মাঝে যেই ভুল বুঝাবুঝি তা নিরসনে তিনি ভূমিকা রাখবেন বলে প্রত্যাশা রাজধানীর জামিয়া ইউসুফ বানুরীর মুহতামিম ও মাহমুদ নগর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আতাউল করিম মাকসুদের।

তিনি বলেছেন, স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো আলেম ধর্মমন্ত্রী পেয়েছে বাংলাদেশ। ধর্মীয় অঙ্গনের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা রয়েছে। তিনি একজন যোগ্য-প্রাজ্ঞ আলেম হিসেবে সব তার জানাশোনা। আশা করি তিনি এ বিষয়ে মানুষের কাছে সঠিক বার্তা পৌঁছাতে পারবেন। 

ধর্মীয় অঙ্গন নিয়ে অনেকেই বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করেন তা সংস্কার করে তিনি মানুষের কাছে ইসলামের সঠিক বার্তা পৌঁছে দিতে অবদান রাখবেন এবং ধর্মের নাম ব্যবহার করে যেসব অরাজকতা ও বিভেদ তৈরি করা হয়, তিনি তা নিরসনে কাজ করবেন বলে প্রত্যাশা রাখি — বলেন মুফতি আতাউল করিম মাকসুদ।

বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়, তবে এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ যে একসঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করছেন এ বিষয়ে আ ফ ম খালিদ হোসেন ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ফেরাতে কাজ করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা রাজধানীর মারকাজুল লুগাতিল আরাবিয়্যার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও আরবি ভাষার শিক্ষক মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকীর।

তার মতে, কোনো একটি গোষ্ঠী বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের একটি সাম্প্রদায়িক চিত্র ফুটিয়ে তুলতে চায়, কিন্তু আমাদের দেশে যে, সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান এবং নিজ নিজ ধর্ম পালন করছেন এ নিয়ে বিশ্বকে সঠিক বার্তা দিতে কাজ করবেন বলে আশা করি।

তিনি আলেম প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যপদে জায়াগা পেলেও সব ধর্মের মানুষের চাওয়া-পাওয়া পূরণে কাজ করবেন বলে মনে করেন এই আলেম।

তিনি বলেন, ড. খালিদ হোসেন আলেম প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যপদে জায়গা পেয়েছেন, তবে যেহেতু তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তাই অন্যান্য ধর্মের মানুষের যেসব প্রত্যাশা রয়েছে তিনি সেগুলোও দেখবেন বলে আমি আশাবাদী। 

বাংলাদেশে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিতরা দেশের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত, স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এতে কোনো পরিবর্তন হয়নি। আ ফ ম খালিদ হোসেন ধর্মমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেও তিনি যেহেতু আলেমদের প্রতিনিধিত্ব করছেন তাই এ দিকটির উন্নয়নেরও তাকে বিশেষ অবদান রাখার অনুরোধ জানিয়ে মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী বলেন, তিনি বিচক্ষণ ও বুদ্ধিদীপ্ত মানুষদের একজন। যদিও তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তবে ধমীর্য় শিক্ষা, এর উন্নয়ন, অগ্রগতির দিকটিও দেখবেন এবং ধর্ম পালনে সাধারণ মানুষ যেসব প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন তিনি তা নিরসনে কাজ করবেন বলে আশা করছি।