বিজয়, মুক্তির স্বাদ— মানুষের জীবনের সবথেকে সেরা অনুভূতি। এর থেকে আনন্দের আর কিছু হয় না। আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর প্রত্যেক জাতিকে বিজয়ের স্বাদ দিয়েছেন। সবাই বিজয় উপযাপন করেন নিজেদের রীতিতে। আমাদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও যুদ্ধের মাধ্যমে মাতৃভূতি মুক্ত করেছিলেন। দখলমুক্ত মাতৃভূমিতে তিনি নিজেও বিজয় উদযাপন করেছেন। তাঁর উদযাপনের সেই ধরন মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুসরণীয়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাতৃভূমি বিজয়ের পর উদযাপনের জন্য প্রথমেই নামাজ আদায় করেছিলেন। এরপর সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন। 

বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মক্কা বিজয়ে নবীজি আনন্দে সর্বপ্রথম আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলেন। আট রাকাত শুকরিয়ার নামাজ আদায় করে আনন্দ প্রকাশ করেন (জাদুল মায়াদ, আল্লামা ইবনুল কাইয়িম জাওজি)। নবীজির দেখাদেখি অনেক সাহাবিও তার অনুকরণে আট রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন।
 
আল্লাহ তায়ালা নিজেও রাসূল সা.-কে সূরা নাসরের মাধ্যমে বিজয় উদযাপনের পদ্ধতি শিখিয়েছেন। সূরা নাসরে বর্ণিত হয়েছে—

‘যখন আল্লাহর সাহায্যে বিজয় আসবে, তখন মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবে। তখন তোমার প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করো। আর তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল’ (সুরা নাসর, আয়াত ১-৩)

এ সুরায় মহান আল্লাহ বিজয় উদযাপনের দুইটি পদ্ধতি নবীজিকে শিখিয়ে দিয়েছেন। ১. আল্লাহর প্রশংসায় তার পবিত্রতা বর্ণনা করা। ২. যুদ্ধকালীন অজান্তে যেসব ভুলত্রুটি হয়েছে, তার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
 
রাসূল সা. তাই করেছিলেন। প্রথমে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় ও তাঁর কাছে ক্ষমা লাভ করেছেন। এরপর তিনি বিজয়ের আনন্দে ঘোষণা করেছিলেন, ‘যারা কাবাঘরে আশ্রয় নেবে তারা নিরাপদ। এভাবে মক্কার সম্ভ্রান্ত কয়েকটি পরিবারের ঘরে যারা আশ্রয় নেবে, তারা যত অত্যাচার-নির্যাতনকারীই হোক না কেন তারাও নিরাপদ। এই ছিল প্রিয়নবীর মক্কা বিজয়ের আনন্দ উৎসবের ঘোষণা।
 
দেশপ্রেম ভালোবাসায় নবীজি বলেন, ‘আল্লাহর পথে একদিন ও এক রাত সীমান্ত পাহারা দেয়া এক মাস পর্যন্ত সিয়াম পালন ও এক মাস ধরে রাতে সালাত আদায়ের চেয়ে বেশি কল্যাণকর। যদি এ অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে যে কাজ সে করে যাচ্ছিল, মৃত্যুর পরও তা তার জন্য অব্যাহত থাকবে, তার রিজিক অব্যাহত থাকবে, কবর-হাশরের ফিতনা থেকে সে নিরাপদ থাকবে।’ (মুসলিম ১৯১৩)