মক্কা বিজয়ের পর মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় যা করেছেন রাসূল সা.
ইসলামের তীর্থভূমি মক্কা। এখানেই রয়েছে মহান রবের ঘর কাবা। কাবাকে প্রদক্ষিণ করে তাওয়াফ করেন বিশ্ব মুসলিম। এখানেই জন্ম গ্রহণ করেছেন মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিম আ.-এর দোয়ার ফসল রহমাতুল্লিল-আলামিন হজরত মুহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মক্কা শহরেই কেটেছে তার শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য ও যৌবনের দিনগুলো। মক্কার হেরা পর্বতে নবুওয়াত লাভ করেছেন তিনি।এখানে ১৩ বছর তাওহীদের দাওয়াত দিয়েছেন মানুষকে।
মোট ৫৩ বছর সময়কাল মক্কায় অতিবাহিত করেছেন রাসূল সা.। কিন্তু মক্কার মুশরিকদের নির্যাতনের শিকার হয়ে জন্মভূমি ছেড়ে মদিনায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। আট বছর মাতৃভূমি মক্কায় প্রবেশ করতে পারেননি তিনি।
বিজ্ঞাপন
এরপর আল্লাহ তায়ালা তাঁকে মক্কা বিজয়ের সুযোগ দিলেন। ৮ম হিজরির ১৭ রমজান (৬৩০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ই জানুয়ারী সোমবার) এক প্রকার বিনা যুদ্ধে মক্কা বিজয় করেন তিনি।
দীর্ঘ দিন মক্কায় রাসূল সা.-এর ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল মুশরিকেরা। তাই রাসূল সা. মক্কা বিজয়ের পর মুশরিকদের মনে আতঙ্ক কাজ করছিল, বিজয়ী বীর মুহাম্মদ সা. তাঁদের সঙ্গে কেমন আচরণ করবেন এবং কীভাবে প্রতিশোধ নেবেন তা ভেবে।
কিন্তু রাসূল সা. কারো ওপর কোনো প্রতিশোধ নিলেন না। সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেন। মহানবী সা. ঘোষণা দিলেন, যে ব্যক্তি নিরস্ত্র অবস্থায় নিজ গৃহে বসে থাকবে, যে ব্যক্তি কাবাঘরে আশ্রয় নেবে অথবা যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ।
আরও পড়ুন
মক্কা বিজয়ের পর রাসূল সা. প্রথমে কাবার ভিতরে প্রবেশ করলেন, ভেতর থেকে মূর্তি অপসারণ করলেন এবং নামাজ পড়লেন। তিনি বললেন,
وَقُلْ جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا
‘বলো সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। (সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত : ৮)
এরপর বাইরে আসলেন। কুরাইশরা তখন সারিবদ্ধভাবে বাইরে দাঁড়িয়ে অবস্থান করছিল। তিনি তাদেরকে সম্বোধন করে বললেন—
হে কুরাইশ সম্প্রদায়? তোমাদের সাথে আজ আমি কেমন আচরণ করব বলে মনে কর? সকলেই উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করতে লাগল- আমরা আপনার কাছ থেকে খুব ভাল আচরণ কামনা করছি।
রাসূল সা. বললেন—ইউসুফ আ. তাঁর ভাইদেরকে যা বলেছিলেন আজ আমিও তোমাদের সাথে তাই বলছি। আজ তোমাদের উপর কোন অভিযোগ নেই। তোমরা মুক্ত-স্বাধীন।