কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে শুরু থেকেই সরব ছিলেন দেশের জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ। এবার কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা পরবর্তী গ্রেপ্তার-নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।

আন্দোলনের জেরে রিমান্ডে থাকা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত সাবেক শিক্ষক আসিফ মাহতাবসহ গ্রেপ্তারকৃত সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও নিরপরাধ মানুষের মুক্তি চেয়েছেন জনপ্রিয় এই ইসলামি আলোচক।

গতকাল বুধবার (৩১ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই দাবি জানান।

ফেসবুক পোস্টে শায়খ আহমাদুল্লাহ লেখেন, ‘ইংল্যান্ড থেকে ফিলোসফিতে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আসিফ মাহতাব, ব্যক্তিগত চিকিৎসকের ভাষ্যমতে মেরুদণ্ডের সমস্যার কারণে তিনি বেশিক্ষণ একভাবে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। তাকে চলাফেরা করতে হয় লাঠিতে ভর দিয়ে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘এই রকম একজন অসুস্থ মানুষ সেতু ভবনে হামলা করতে যাবেন তা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য না। তারপরও সেতু ভবনে আক্রমণের অভিযোগে তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এই ঘটনার নিন্দা জানাই। অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আসিফ মাহতাবসহ গ্রেপ্তারকৃত সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও নিরপরাধ মানুষকে মুক্তি দিন।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিতে দেখা গেছে শায়খ আহমাদুল্লাহকে। আন্দোলনের শুরুর দিকে ঢাবিসহ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

গত ১৭ জুলাই এক পোস্ট শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছিলেন— `শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আহবান জানাই। ইতোমধ্যে অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে। এরপরও আলোচনায় না বসলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে বৈ কমবে না। আমরা আর কোনো আর্তনাদ শুনতে চাই না'।

তিনি আরও বলেন, `এমনিতেই মেধাবী তরুণদের দেশ ছেড়ে বিদেশে স্থায়ী হওয়ার সারি প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে। মেধার মূল্যায়ন না হলে এ সংকট আরো ঘনীভূত হবে'।
 
প্রসঙ্গত, কোটা আন্দোলন ঘিরে সেতু ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বনানী থানায় করা মামলায় গত সোমবার আসিফ মাহতাবকে ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠান ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মইনুল ইসলামের আদালত। একই ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী আরিফ সোহেলের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

অথচ ছবিতে দেখা যায়, ঘটনার দিন আরিফ সোহেল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল করছিলেন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে তিনি ওইদিন সাভার থেকে ঢাকায় এসে সহিংসতায় অংশ নিলেন?

এর আগে, গত শনিবার (২৭ জুলাই) দিবাগত রাত ১টার দিকে আসিফ মাহতাবকে উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরের বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। একই রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক জাবি শিক্ষার্থী আরিফ সোহেলকে সাভারের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।

এনটি