মুসা আ. যে ৯টি মুজিজা পেয়েছিলেন
মুসলমানদের কাছে বিশেষ পরিচিত একটি শব্দ মুজিজা। মুজিজা শব্দটি আরবি। এর অর্থ ‘অক্ষমকারী অলৌকিক নিদর্শন। নবীগণ তাঁদের নুবুওয়াতের দাবি প্রমাণ করতে যে সকল অলৌকিক নিদর্শন প্রদর্শন করেন সেগুলোকে ‘মুজিজা’ বলা হয়।
কুরআন-হাদীসে মুজিযা শব্দটি ব্যবহৃত হয় নি, মুজিযা বুঝাতে ‘আয়াত’ (الآية) অর্থাৎ চিহ্ন বা নিদর্শন বলা হয়েছে। পরবর্তী যুগে ‘মুজিযা’ পরিভাষাটির উৎপত্তি। নতুন পরিভাষা ব্যবহারে কোনো আপত্তি নেই।
বিজ্ঞাপন
নবী-রাসূলগণ আল্লাহর ইচ্ছায় মুজিজা প্রদর্শন করেছেন। আল্লাহ বলেন,
قَالُوا إِنْ أَنْتُمْ إِلا بَشَرٌ مِثْلُنَا تُرِيدُونَ أَنْ تَصُدُّونَا عَمَّا كَانَ يَعْبُدُ آَبَاؤُنَا فَأْتُونَا بِسُلْطَانٍ مُبِينٍ. قَالَتْ لَهُمْ رُسُلُهُمْ إِنْ نَحْنُ إِلا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ وَلَكِنَّ اللَّهَ يَمُنُّ عَلَى مَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَمَا كَانَ لَنَا أَنْ نَأْتِيَكُمْ بِسُلْطَانٍ إِلا بِإِذْنِ اللَّهِ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ
তারা (কাফিরগণ) বলত: ‘তোমরা (নবীগণ) তো আমাদেরই মত মানুষ। আমাদের পিতৃপুরুষগণ যাদের ইবাদত করত তোমরা তাদের ইবাদত থেকে আমাদেরকে বিরত রাখতে চাও। অতএব তোমরা আমাদের নিকট কোনো অকাট্য ক্ষমতা (মুজিজা) উপস্থিত কর। তাদের রাসূলগণ তাদেরকে বলতেন: সত্য বটে আমরা তোমাদের মত মানুষ বৈ কিছুই নই, কিন্তু আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত তোমাদের নিকট ক্ষমতা (মুজিজা) উপস্থিত করা আমাদের কাজ নয়। মুমিনগণের আল্লাহরই উপর নির্ভর করা উচিত। (সূরা ইবরাহীম, আয়াত : ১০-১১)
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,
وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَنْ يَأْتِيَ بِآَيَةٍ إِلا بِإِذْنِ اللَّهِ
আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কোনো নিদর্শন (মুজিজা) উপস্থিত করা কোনো রাসূলের কাজ নয়। (সূরা রাদ, আয়াত : ৩৮)
আল্লাহ তায়ালা নবী মুসা আলাইহিস সালামকে ৯টি মুজিজা দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,
وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسٰی تِسۡعَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ فَسۡـَٔلۡ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ اِذۡ جَآءَهُمۡ فَقَالَ لَهٗ فِرۡعَوۡنُ اِنِّیۡ لَاَظُنُّكَ یٰمُوۡسٰی مَسۡحُوۡرًا
আর আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম, সুতরাং তুমি বনী ইসরাঈলকে জিজ্ঞাসা কর, যখন সে তাদের কাছে আসল তখন ফির‘আউন তাকে বলল, ‘হে মূসা, আমিতো ধারণা করি তুমি যাদুগ্রস্ত’। (সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত : ১০১)
আরও পড়ুন
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর বর্ণনা মতে সেই মুজিজাগুলো হলো—
১. মূসা (আঃ)-এর ব্যবহৃত লাঠি, যা নিক্ষেপ করা মাত্র অজগর সাপের মতো হয়ে যেত।
২. শুভ্র হাত, যা বগলের নীচ থেকে বের করতেই জ্যোতির্ময় হয়ে সার্চ লাইটের মত চমকাতে থাকত।
৩. নিজের তোতলামি, যা মূসা আ.-এর প্রার্থনাক্রমে দূর করে দেওয়া হয়।
৪. ফিরাউন সম্প্রদায়ের ওপ প্লাবণের গজব প্রেরণ।
৫. এক ঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশ দুর্ভিক্ষকবলিত হওয়া এবং তারপর একের পর এক। ৫. তুফান। ৬. পঙ্গপাল বিস্তার।৭. শস্যকীট। ৮. ব্যাঙ এবং ৯. রক্তের আপদ অবতীর্ণ হওয়া।