মদিনায় ধর্মীয় শিক্ষার জন্য যে সাহাবিকে পাঠিয়েছিলেন মহানবী সা.
নবুওয়তের একাদশ বছরে মদিনা থেকে মক্কায় হজ করতে আসা খাযরাজ বংশের কিছু লোক মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন।
মদিনায় পৌঁছে তারা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে পত্র লিখলেন যে, আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের এখানে ইসলামের প্রচার-প্রসার ঘটছে। এখন আমাদের এখানে এমন একজন সাহাবি প্রয়োজন যিনি এসে আমাদের সবাইকে কোরআন শরিফ পড়াবেন। এবং মানুষকে ইসলামের দিকে আহ্বান করবেন। আমাদেরকে শরীয়তের হুকুম আহকাম শিক্ষা দেবেন এবং নামাজের ইমামতি করবেন। আপনি আমাদের কাছে এমন একজনকে পাঠিয়ে দিন, যিনি ধর্মীয় এসব বিষয় আমাদের শিক্ষা দেবেন।
বিজ্ঞাপন
মদিনা থেকে এই পত্র পাওয়ার পর মহানবী সা. মদিনার মুসলমানদের কোরআন ও ইসলাম শিক্ষার জন্য মুসয়াব ইবনে উমায়ের রা.-কে পাঠালেন। তার মাধ্যমে মদিনায় ইসলামের প্রথম মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হলো এবং তিনিই মদিনার মুসলমানদের জন্য প্রথম ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হন।
আরও পড়ুন
হজরত মুসয়াব রা. উহুদ যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। তাঁর উপনাম আবু আব্দুল্লাহ। মক্কার বিখ্যাত ‘কুরাইশ’ গোত্রের ‘বনু আব্দুদদার’ শাখার সন্তান। ইসলাম গ্রহণের আগে মুসআব রা. ছিলেন মা-বাবার অতি আদরের সন্তান। তৎকালীন অন্যতম সুদর্শন যুবক। বিলাসিতা ও আভিজাত্যে বেড়ে উঠেন তিনি।
কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর তার পরিবার তার বিরাগভাজনে পরিণত হয়। ইসলাম গ্রহণের খবর শুনে তাঁর মমতাময়ী মা-ও তার বিপক্ষে চলে যান। মা ও গোত্রের লোকজন তাঁকে আটক করে একটি ঘরে বন্দি করে রাখে।
বন্দি অবস্থায় তিনি একদিন খবর পেলেন তাঁর মতো নির্যাতিত মুসলমানের একটি দল হাবশায় হিজরত করছেন। সুকৌশলে তিনি সেই দলটির সঙ্গে চলে গেলেন হাবশায়। কয়েক বছর হাবশায় থেকে আবার মক্কায় ফিরে আসেন।
নবুয়তের দ্বাদশ বছর ইসলাম গ্রহণের পর মদিনার আনসার সাহাবিরা তাদের জন্য একজন শিক্ষক চাইলে রাসূল সা. তাদের সঙ্গে মুসআব রা.-কে মদিনাবাসীর ধর্মীয় শিক্ষক ও দাঈ হিসেবে প্রেরণ করেন। তিনিই ছিলেন ইসলামের সর্বপ্রথম দূত। ইতিপূর্বে রাসূল (সা.)-এর পক্ষ থেকে কোনো দূত কোথাও প্রেরিত হননি।