মৌমাছি দেখতে খুব ছোট একটি প্রাণী। তবে এই প্রাণীটির আহরণ করা মধু থেকে বিশেষ উপকার পেয়ে থাকে মানুষ।

আরবিতে মৌমাছিকে বলা হয় ‘নাহল’। পবিত্র কোরআনে ‘নাহল’ নামে একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটি পবিত্র কোরআনের ১৬তম সূরা। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৮টি। এই সূরার ৬৮ আয়াতের থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে।

পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে,
  
وَأَوْحَى رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِي مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ
অর্থ: ‘আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেন: পর্বতগাহ্রে, বৃক্ষ এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরি কর। (সূরা: নাহল, আয়াত: ৬৮)।  

ثُمَّ كُلِي مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِي سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلاً يَخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاء لِلنَّاسِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

অর্থ: এরপর সব প্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।’ (সূরা নাহল, আয়াত : ৬৯)।

মৌমাছি মানুষের জন্য উৎকৃষ্ট মধু আহরণ করে। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মধু খেতে খুব ভালোবাসতেন। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ১২১)।

হজরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত আছে, এক লোক রাসূল সা.-এর কাছে এসে বলল, আমার ভাইয়ের পেট ছুটে গিয়েছে। (অর্থাৎ খুব পায়খানা হচ্ছে)। তিনি বলেন, তাকে মধু পান করিয়ে দাও। সে গেল এবং তাকে মধু পান করাল। আবার সে এলো এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! তার রোগ তো আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি এবারও বললেন, যাও, তাকে মধু পান করাও। সে গেল এবং তাকে মধু পান করাল। পুনরায় এসে সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! তার পায়খানা তো আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বললেন, আল্লাহ সত্যবাদী এবং তোমার ভাইওয়র পেট মিথ্যাবাদী। তুমি যাও এবং তাকে মধু পান করাও। সে গেল এবং তাকে মধু পান করাল। এবার সে সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করল। (বোখারি ও মুসলিম)।

আরেক হাদিসে হজরত ইবনু আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, তিনটি জিনিসে শিফা বা রোগ মুক্তি রয়েছে। শিঙ্গা লাগানো, মধুপান এবং (গরম লোহা দ্বারা) দাগ দিয়ে নেওয়া। কিন্তু আমার উম্মতকে আমি দাগ নিতে নিষেধ করছি। (বুখারি)।