বদলি হজ করানোর পর অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ হলে করণীয় কী?
হজ ইসলামের ফরজ বিধান। কারো কাছে নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত মক্কায় গিয়ে ফিরে আসা পর্যন্ত ব্যয়ভার বহনের মতো সম্পদ থাকলে তার ওপর হজ ফরজ।
হজ ফরজ হলে তাৎক্ষণিক আদায় করে নেওয়া উচিত। কেউ হজ আদায়ে গড়িমসি করলে তার জন্য হাদিসে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রাসূল সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বাহ্যিক স্পষ্ট কোনো প্রয়োজন কিংবা অত্যাচারী বাদশাহ অথবা প্রতিবন্ধক সৃষ্টিকারী কোনো রোগের কারণে হজে গমনে বাধাগ্রস্ত হওয়া বিনে হজ না করে মৃত্যুবরণ করল, সে চাইলে ইহুদি হয়ে মরতে পারে। চাইলে খ্রিস্টান হয়ে মরতে পারে।’ (দারেমি, হাদিস : ১৮২৬; বায়হাকি, হাদিস : ৩৬৯৩)
তবে হজ ফরজ হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি যদি এমন অসুস্থ হয়ে পড়ে যে, তা আর সুস্থ হওয়ার আশা নেই তাহলে তার জন্য নিজের পক্ষ থেকে কাউকে পাঠিয়ে বদলি হজ করানো ফরজ।
কিন্তু কেউ যদি বদলি হজ করানোর পর আবার সুস্থ হয়ে যান তাহলে এ ক্ষেত্রে করণীয় কী? যেমন একজন এ বিষয়ে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছেন—
‘অনেক বছর আগেই আমার ওপর হজ ফরজ হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়িক ব্যস্ততার কারণে সময় বের করতে পারছিলাম না। গত তিন বছর আগে হঠাৎ স্ট্রোক করে আমার এক সাইড প্যারালাইজড হয়ে যায়। আমি পরের বছর আমার পক্ষ থেকে বদলী হজ করাই। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি আবার ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠি। এখন আমি হজ করতে সক্ষম’।
‘আমি জানতে চাই, বদলি হজ করানোর মাধ্যমে আমার ফরজ হজটি আদায় হয়েছিল কি? না কি আমি নিজে গিয়ে তা আবার আদায় করতে হবে।‘
ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতে, যার ওপর হজ ফরজ হয়েছে তিনি যেহেতু নিজে গিয়ে হজ করার মতো সুস্থতা ফিরে পেয়েছেন, তাই এখন তার নিজের সেই ফরজ হজটি আদায় করা জরুরি। আগে অন্যের মাধ্যমে যে বদলি হজ করানো হয়েছে তা এক্ষেত্রে যথেষ্ট হবে না; তা নফল গণ্য হবে।
(আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১৫২; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/৪৭৯, ৪৮১; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬০, ২/৩০৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৯৮, আল কাউসার অনলাইন)