সতর খুলে গেলে অজু ভাঙবে?
অজুর সঙ্গে নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, বায়তুল্লাহ তাওয়াফসহ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলো সম্পৃক্ত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসেহ করো ও দুই পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করো’। (সূরা মায়িদাহ : ৬)
সব সময় অজু অবস্থায় থাকার ফজিলত ও মর্যাদা অনেক বেশি। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র অবস্থায় থাকা ব্যক্তিদের ভালোবাসেন। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তওবাকারী এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)
বিজ্ঞাপন
সবসময় অজু অবস্থায় থাকা হজরত বিলাল রা.-এর বিশেষ আমল ছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতে ভ্রমণের সময় বিলাল রা.-এর জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন।
হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত বিলালকে রা. বললেন, তোমার সর্বোত্তম আমল সম্পর্কে আমাকে বলো, আমি জান্নাতে তোমার জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছি। বিলাল রা. বললেন, আমার সর্বোত্তম আমল হলো, আমি রাতে ও দিনে অজু অবস্থায় থাকি। আর যখনই অজু করি তখনই সাধ্যমতো নামাজ আদায় করি।’ (কানজুল উম্মাল : ৩৫৪৫৪)
অজু বা গোসল করার পর কোনো ব্যক্তির সতর খুলে গেলে অজু নষ্ট হবে কিনা— এমন প্রশ্ন জাগে অনেকের মনে।
এ বিষয়ে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো— অজু বা গোসল করার পর সতর খুলে গেলে অজু ভাঙবে না। তবে কখনো সতর খুলে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা ঢেকে নিতে হবে।
একজন পুরুষ এবং নারীর জন্য যেসব অঙ্গ অন্যের সামনে ঢেকে রাখা হয় তাকে সতর বলা হয়। ‘সতর’ শব্দটি আরবি ‘আস-সাতরু’ ধাতুমূল থেকে এসেছে। এর আভিধানিক অর্থ ঢেকে রাখা। একজন পুরুষের সতর বা সবসময় ঢেকে রাখতে হয় এমন অংশ হলো- নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। অর্থাৎ এতটুকু স্থান অন্য ব্যক্তিদের সামনে ঢেকে রাখা ফরজ। বাকি মানুষের সামনে যাওয়ার সময় ক্ষেত্র ও সমাজ হিসেবে যা শালীন ও খোদাভীতি প্রকাশ করে এমন পোশাক পরিধান করা উত্তম।
আর একজন নারীর পুরো শরীরই সতর। তবে মাহরাহ পুরুষের সামনে মাথা, চুল, ঘাড়, গলা, কান, হাত, পা, টাখনু, চেহারা, গলা, ঘাড় সংশ্লিষ্ট সিনার উপরের অংশ ছাড়া বাকি পূর্ণ শরীর সতর। ফতোয়ার কিতাবে সিনার কথা এসেছে। এর মানে হল, স্তনের উপরের ও গলার নিচের মাঝামাঝি অংশটাকে বুঝানো হয়েছে। স্তনও মাহরাম পুরুষের জন্য সতরের অন্তর্ভূক্ত।