ঋতুর পরিবর্তন আল্লাহ তায়ালার দান। ঋতুর শীত-গ্রীষ্মকাল নিয়ে আল্লাহর রাসূলের বর্ণনা হলো এটি জাহান্নামের শ্বাস-প্রশ্বাসের পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকে।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদিসে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জাহান্নাম আল্লাহ তায়ালার কাছে আবেদন করল, হে আমার প্রতিপালক! আমার এক অংশ অপর অংশকে খেয়ে ফেলছে, আমাকে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার অনুমতি দিন। তখন আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামকে দুইবার শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগের অনুমতি দিলেন। একটি শীতকালে এবং অপরটি গ্রীষ্মকালে। অতএব তোমরা শীতকালে যে হিমঋতু অনুভব করো তা জাহান্নামের শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে এবং গ্রীষ্মকালে যে প্রচণ্ড উষ্ণতা অনুভব করো তা এই কারণেই। (বুখারি, হাদিস, ৬১৭, ৩২৬০)

গ্রীষ্মকালে গরমের তীব্রতার কারণে কোনো কাজ করতে ভালো লাগে না। এর কারণে মানুষের মন-মেজাজেও বিরূপ প্রভাব পড়ে। এরপরও থেমে থাকে না মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা, কাজকর্ম। এই সময় সহজ কিছু আমল করা যেতে পারে। এমন কিছু আমল হলো—

পানি পান করানো

গ্রীষ্মকালে তাপপ্রবাহের কারণে মানুষ বেশি বেশি পিপাসা অনুভব করে। এ সময় পিপাসার্তকে পানি পান করানো একটি উত্তম কাজ। 

 এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সা.-কে প্রশ্ন করলেন, ‘কোন দান উত্তম? তিনি বললেন, ‘পানি পান করানো।’  (সুনানে নাসাই : ৫৪৫৬)

ইমাম কুরতুবি রহ. বলেন, ‘তৃষ্ণার্তের তৃষ্ণা নিবারণ সর্বোত্তম মহৎ কাজের একটি।’ হাদিসের অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘সদকা বা দান জাহান্নামের আগুন নির্বাপণ করে। আর পানি পান করানো উত্তম সদকা।’ (সুনানে আবু দাউদ : ৭৪৩৫)

নফল নামাজ আদায়

অতিরিক্ত গরম হলো- জাহান্নামের নিশ্বাস, তাই জাহান্নামের ভয়ে বেশি করে এবং লম্বা লম্বা সূরা দিয়ে নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। 

হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘যখন গরম বেশি পড়বে, তখন বেশি নামাজ আদায় করো। কারণ অতিরিক্ত গরম হলো- জাহান্নামের নিশ্বাস।’ (মিশকাত : ৫৯১)

বৃষ্টির জন্য নামাজ

গরমের কারণে সবাইকে কষ্ট পোহাতে হয়। এ সময় তাপপ্রবাহের কারণে জমিন শুকিয়ে চৌচির হয়ে যায়। আদ্রতা না থাকার কারণে গাছপালা মরে যাওয়ার উপক্রম হয়। তাই তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে, শস্য ফলাতে প্রচুর বৃষ্টির প্রয়োজন হয়। 

একইসঙ্গে পশুপাখির খাবারের জন্য যেমন বৃষ্টি দরকার, এ সময় তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট নানা জটিলতা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতেও আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি খুব প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে দয়াময় আল্লাহতায়ালার দরবারে বৃষ্টি কামনা করে নামাজ পড়া ও দোয়া করা সুন্নত।