ছবি : সংগৃহীত

জাকাত ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। জাকাত বলতে ধন-সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দান করাকে বোঝায়। পারিভাষিক অর্থে জাকাত হলো, নিসাবধারীর ধন-মাল, জমির ফসল ও খনিজ সম্পদের ওপর ইসলামি শরিয়ত নির্ধারিত অংশ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করা।

আল্লাহ তাআলা জাকাত ব্যয়ের খাতগুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। সেগুলো আমরা আগের একটি লেখায় উল্লেখ করেছি। এখানে উল্লেখ করা হবে আত্মীয়-স্বজনকে জাকাত দেওয়া যাবে কিনা— সেই বিষয়ে। অনেকেই আমাদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চান।

মূলত সহোদর ভাই-বোন, ফুফু-ফুফা, খালা-খালু, মামা-মামি যেহেতু উসুল বা ফুরু— অর্থাৎ জাকাতদাতার মূল বা শাখা নয়। তাই তাদের জাকাত দেওয়া যাবে, যদি তারা জাকাত গ্রহণের উপযোগী হয়। এমনিভাবে জাকাতের টাকা দিয়ে কাপড় কিনে দিলেও জাকাত আদায় হয়ে যাবে। অন্তরে জাকাতের নিয়ত রেখে মুখে তা উলে­খ না করে দিয়ে দিলেও জাকাত আদায় হয়ে যাবে। (হিদায়া : ১/২০৬; বাদায়িউস সানায়ি : ২/৪৯)

কোনো নর বা নারী কর্তৃক জাকাতের মাল তার দরিদ্র ভাই, বোন, চাচা, ফুফুসহ সকল দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনকে দিতে কোনো ধরনের আপত্তি নেই। যেহেতু এ সংক্রান্ত দলিলগুলো সাধারণ। বরং তাদের জাকাত দেওয়া হলে সেটা সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়ের অন্তর্ভুক্ত এবং প্রশংসনীয়। এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মিসকিনকে জাকাত দেওয়া সদকা। আর আত্মীয়কে দেওয়া সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৫৭৯৪; সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৫৮২)

তবে পিতা ও মাতা ব্যতীত; তাদের বংশীয় স্তর যত ঊর্ধ্বে হোক না কেন (অর্থাৎ দাদা, পরদাদা…নানা, পর নানা…দাদী, পরদাদী…নানী…পর নানী)। এবং ছেলে ও মেয়ে সন্তান ব্যতীত; তাদের বংশীয় স্তর যত নিম্নে হোক না কেন (অর্থাৎ পৌত্র, প্রপৌত্র ...)— এরা গরিব হলেও এদের জাকাতের অর্থ দেওয়া যাবে না; বরং সামর্থ্য থাকলে তাদের খরচ চালানো আবশ্যিক কর্তব্য; যদি নিজেদের খরচ চালানোর মত তাদের অন্য কেউ না থাকে।