রমজানে শিশুদের যেভাবে ধর্মীয় বিষয়ে আগ্রহী করবেন
রমজান মাসে মুমিনের অন্তরে আনন্দের শিহরণ বয়ে যায়। তারাবিতে মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের ঢল, বাসা-বাড়ির মতো মসজিদে ইফতার আয়োজন, ভোররাতে সেহরির জন্য মসজিদের মাইক থেকে সাধারণ মুসলমানদের ডেকে দেওয়ার প্রচলন। সব মিলিয়ে মাসজুড়ে বাড়ি, মসজিদ, পাড়া-মহল্লা সব জায়গায় ইবাদত পালনে এক ধরণের উৎসব উৎসব আমেজ দেখা যায়।
ইবাদতের ভরা মৌসুমে বড়দের সঙ্গে শিশুদেরও থাকে স্বস্তঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণ। বড়দের দেখে দেখে শৈশবেই ধর্মীয় বিষয়ের প্রতি এক ধরনের আগ্রহ অনুভব করে শিশুরা।
বিজ্ঞাপন
শিশুদের আগ্রহ কাজে লাগিয়ে শৈশব থেকেই তাদের অন্তরে ধর্মীয় বিধি-বিধান এবং ধর্মীয় বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা তৈরি সম্ভব বলে মনে করেন ইসলামি চিন্তাবিদ, রাজধানীর মারকাজুল লুগাতিল আরাবিয়্যার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও আরবি ভাষার শিক্ষক মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী।
তিনি বলেন, রমজানে আমল-ইবাদতে আগ্রহী করতে পূর্বসূরী আলেম, মুসলিম মনীষীদের কাজগুলো অভিভাবকদের জন্য অনুসরণীয় হতে পারে। সাহাবায়ে কেরাম তাদের সন্তানদের রমজানে রোজা রাখা, কোরআন তিলাওয়াতের প্রতি জোর দিতেন। যারা তিলাওয়াত পারতো তাদের কোরআন খতমের প্রতি উদ্বৃদ্ধ করতেন, যা পারতো না তাদের শেখাতেন, আমাদের অভিভাবকরাও তাই করতে পারেন। কোরআন তিলাওয়াতে আগ্রহী করার জন্য তাদের পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখতে পারেন।
আরও পড়ুন
‘পরিবারের পুরুষ অভিভাবকরা নিজেদের সঙ্গে তারাবি ও ফরজ নামাজে শিশুদের মসজিদে নিয়ে যেতে পারেন’।
‘সেহরি, ইফতারের গুরুত্ব বোঝানো উচিত তাদের। ইফতারের সময় দোয়া কবুলের গুরুত্বও বোঝানো যেতে পারে’।
‘ছোটবেলা থেকেই রোজার গুরুত্ব বোঝানো উচিত। যারা সাবালক তাদের রোজা না রাখার ক্ষতি সম্পর্কে বোঝানো উচিত। একেবারে ছোট, রোজা ফরজ হয়নি এমন শিশুরা দিনের যতটুকু সময় রোজা রাখতে সক্ষম তাদের সেটুকু সময় রোজার প্রতি উদ্ধুদ্ধ করা উচিত। রোজার দিনে শিশুদের ক্ষুধা ভুলিয়ে রাখতে সাহাবি-পূর্বসূরী আলেমরা তাদের শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতেন, খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করতেন। আমাদের অভিভাবকরাও একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন’।
মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী বলেন, ‘রমজানে অভিভাবকদের নিজের কাজের চাপ থাকে প্রচুর, এ কারণে রমজান, সেহরি, ইফতারের সময় শিশুরা কোনো বিষয় বুঝতে না পারলে অথবা করতে না চাইলে তাদের ওপর রাগারাগি করা উচিত নয়। এতে তারা ইবাদতের প্রতি আগ্রহ হারাতে পারে এবং শৈশবেই নেতিবাচক ধারণা পেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, শিশুদের ওপর আল্লাহ তায়ালা ইসলামের বিধান মানা ফরজ করেননি। তবে মুসলিম হিসেবে যেহেতু তাকে এক সময় এসব বিধি-বিধান-পালন করতেই হবে, তাই সুন্দর ও মার্জনীয় পন্থায় শিশুদের ইবাদতের প্রতি আগ্রহী করতে হবে’।