ফিতরা যাদের দেওয়া যাবে
‘সদকাতুল ফিতর’ ও ‘জাকাতুল ফিতর’-এর অর্থ হলো জাকাত বা ফিতরের সদকা। ফিতরা আদায় করা ইসলামি বিধান মতে ওয়াজিব। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, ‘রাসুল (সা.) সদকাতুল ফিতর অপরিহার্য করেছেন। এর পরিমাণ হলো- এক সা’ জব বা এক সা’ খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সবার ওপর এটা ওয়াজিব।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস : ১৫১২)
ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর কাকে দেবেন
বিজ্ঞাপন
যে ব্যক্তি যে স্থানে ফিতরা আদায় করছেন, সে স্থানের গরীব মুসলমানদেরকে ফিতরা দিতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এর হাদিস, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেন, রমজান মাসে জাকাতুল ফিতর (ফিতরা) ফরজ করেছেন গরিবদের খাদ্যস্বরূপ...”। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৭১)
যদি অন্য দেশের মানুষের প্রয়োজন আরও বেশি হয়, তাহলে সে দেশে স্থানান্তর করা জায়েজ হবে। তবে, মসজিদ নির্মাণ ও জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য ফিতরা সংরক্ষণ করা জায়েজ হবে না।
ফিতরার নিসাব কতটুকু?
জাকাতের নিসাবের সমপরিমাণই ফিতরার নিসাব। অর্থাৎ কারো কাছে সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা তার সমমূল্যের নগদ অর্থ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অতিরিক্ত হয়ে ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় বিদ্যমান থাকলে তার ওপর ফিতরা ওয়াজিব হবে। যার ওপর সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব, তিনি নিজের পক্ষ থেকে যেমন আদায় করবেন, তেমনি নিজের অধীনদের পক্ষ থেকেও আদায় করবেন। তবে এতে জাকাতের মতো বর্ষ অতিক্রম হওয়া শর্ত নয়। (ফাতহুল কাদির : ২/২৮১)
জনপ্রতি ফিতরার মূল্য কতো?
বর্তমান বাজারদর হিসাবে যেহেতু গমের দামই সবচেয়ে কম, তাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রতিবছর আধা ‘সা’ গমকে মাপকাঠি ধরে ওই সময়ের বাজারদর হিসাবে তার মূল্য ফিতরার সর্বনিম্ন পরিমাণ (এ বছর তা ৭০ টাকা) ঘোষণা করা হয়। আর পনির দ্বারা আদায় করলে সর্বোচ্চ বাজার মূল্যে এবার ফিতরা দুই হাজার ৩১০ টাকা।
নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি মূল্যের খাদ্যবস্তুকে মাপকাঠি ধরে ফিতরা আদায় করা উত্তম। কারণ সদকার ক্ষেত্রে গরিবদের প্রয়োজন পূরণ ও তাদের স্বার্থ সংরক্ষণই হলো গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য আদায়কারীর সামর্থ্যও বিবেচনায় রাখা হয়।
প্রসঙ্গত, ঈদুল ফিতরের দিন সকালে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে সদকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম। তবে জাকাতের মতো সে সময়ের আগেও তা আদায় করা যায়।