প্রতীকী ছবি

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিদিন নিয়মিত নির্ধারিত একটি পরিমাণ কোরআন তিলাওয়াত করতেন। কখনই তিনি এর ব্যতিক্রম করেননি। তিনি তারতীলের সাথে কোরআন তিলাওয়াত করতেন। তিলাওয়াতের সময় প্রত্যেক অক্ষর সঠিক মাখরাজ (উচ্চারণের স্থান) থেকে সুস্পষ্ট করে উচ্চারণ করতেন এবং প্রতিটি আয়াত পাঠ শেষে ওয়াকফ করতেন (বিরতি গ্রহণ করতেন)। তিলাওয়াতের সময় হরফে মদ আসলে লম্বা করে পড়তেন। 

তিলাওয়াতের শুরুতে তিনিأَعُوذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ পাঠ করতেন। কখনও তিনি এই দোয়াটি পাঠ করতেন-

أَعُوذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ مِنْ هَمْزِهِ وَنَفْخِهِ وَنَفْثِهِ

‘আমি বিতারিত শয়তান, তার ধোঁকা, ফুঁক ও তার জাদু থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।

তিনি নিজে কোরআন তিলাওয়াতের পাশাপাশি অন্যের কাছ থেকে কোরআন তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরআন তিলাওয়াত করার আদেশ দিতেন। তিনি তার সামনে কোরআন পড়তেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনতেন। এ সময় তার অন্তরের অবস্থা ও একাগ্রতা এমন হত যে, তার উভয় চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হতো।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে কোরআন তিলাওয়াত করতেন। অজু ছাড়াও তিনি কোরআন পাঠ করতেন। তবে স্ত্রী সহবাস জনিত কারণে অপবিত্র হলে পবিত্রতা অর্জন না করে কোরআন পড়তেন না। তিনি আওয়াজ উঁচু করে সুন্দর সুর দিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করতেন। 

আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফ্ফাল রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

زَيِّنُوا الْقُرْآنَ بِأَصْوَاتِكُمْ

তোমাদের আওয়াজের মাধ্যমে কোরআনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি কর। অর্থাৎ, তোমরা সুন্দর আওয়াজের মাধ্যমে কোরআন পড়। (বুখারি)

তিনি  আরও বলেছেন, 

مَا أَذِنَ اللهُ لِشَىْءٍ مَا أَذِنَ لِنَبِىٍّ حَسَنِ الصَّوْتِ يتغنى بِالْقُرْآنِ

আল্লাহ তায়ালা সুন্দর কন্ঠের অধিকারী নবীর কাছ থেকে সুন্দর স্বরে কোরআন তিলাওয়াত যেমনভাবে শুনেন অন্য কোন বস্তুকে সে রকমভাবে শ্রবণ করেন না। (বুখারি, হাদিস, ৭৫৪৪, মিশকাত, হাদিস, ২১৯৩)

এই হাদিসের মাধ্যমে বুঝায় যায়, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরআন তিলাওয়াতের সময় আওয়াজকে উঁচু ও সুন্দর করতে বলেছেন। 

কোরআন  তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় হলো-কোন প্রকার কৃত্রিম প্রচেষ্টা ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে যা হয়ে থাকে এবং স্বাভাবিক আওয়াজের সাথে যদি অতিরিক্ত সৌন্দর্য যোগ করা হয় তাতে কোন অসুবিধা নেই। 

এনটি