তাবলিগ জামাতে যে পরিভাষাগুলো ব্যবহার করা হয়
তাবলিগ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ প্রচার করা, পৌঁছে দেওয়া। বর্তমান তাবলিগ জামাত বলে পরিচিত কার্যক্রমের সূচনা গত শতাব্দিতেতে ভারতের মেওয়াত অঞ্চলের মাওলানা ইলিয়াস রহিমাহুল্লাহর মাধ্যমে।
তাবলিগ জামাতে একজন মুসলমানের ঈমান এবং ব্যক্তি জীবনে ধর্ম পালনের বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাবলিগের সাথীদের জন্য প্রতিদিন বাড়ি এবং মসজিদে তালিমের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া প্রতি সপ্তাহে দুটি ‘গাশত’ বা দ্বিনের দাওয়াতের জন্য মানুষের কাছে গিয়ে তাদের বোঝানো, যার একটি নিজ মহাল্লায় এবং আরেকটি অন্য মহাল্লার মসজিদে। বছরে এক চিল্লা বা চল্লিশ দিন আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া। জীবনে তিন চিল্লা, প্রতি মাসে তিন দিন এ উদ্দেশ্যে ব্যয় করা তাবলিগের সাথীদের জন্য জরুরি।
আরও পড়ুন
তাবলিগের কাজগুলো পরিচালিত হয় একটি নিয়মে। প্রত্যেক কাজের জন্য উর্দু, ফার্সি ও আরবি শব্দের মিশেলে বিভিন্ন পরিভাষা ব্যবহার করা হয় তাবলিগে। এখানে তাবলিগে ব্যবহৃত কিছু পরিভাষা তুলে ধরা হলো-
>> ইজতেমা— মহাসমাবেশ।
>> তাবলিগ— প্রচার করা, পৌঁছানো।
>> আমির— দলনেতা।
>> রাহবার— পথপ্রদর্শক।
>> মামুর— আমিরের অনুসরণকারী।
>> মুতাকাল্লিম— কথক।
>> গাশত— ভ্রমণ, ঘোরাফেরা করা, ধর্মের বিশেষ প্রচারাভিযান।
>> উমুমি গাশত- দলগতভাবে দ্বিনের দাওয়াতে গমন।
>> খুসুসি গাশত— বিশেষ কাউকে দাওয়াত দেওয়ার জন্য বের হওয়া।
>> তাশকিল— গঠন, রূপদান, প্রচেষ্টা। অর্থাৎ ধর্মীয় কাজে উৎসাহ দেওয়া।
>> তালিম— শিক্ষা (শিক্ষার আসর)।
>> আম বয়ান— সবার উদ্দেশে বক্তৃতা।
>> খাস বয়ান— বিশেষ কোনো শ্রেণির জন্য প্রদত্ত বক্তৃতা।
>> ইকরাম— সম্মান দেখানো, সহযোগিতা, খেদমত করা।
>> ইস্তেকবাল— অভ্যর্থনা।
>> খেদমত— সেবা করা (জামাতের সাথিদের খাবারসহ বিভিন্ন আয়োজনে দায়িত্ব পালন)।
>> মাশওয়ারা— পরামর্শ।
>> সামানা— আসবাবপত্র।
>> খিত্তা— টুকরা জায়গা, এলাকা (ইজতেমা মাঠের নির্ধারিত এলাকা)।
>> চিল্লা— ৪০ দিনের জন্য বিভিন্ন মসজিদের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়া।
>> তিন চিল্লা— চার মাস মেয়াদে আল্লাহর রাস্তায় বেরিয়ে পড়া।
>> সাল— এক বছর আল্লাহর রাস্তায় কাটানো।
>> জোড়— বিভিন্ন স্তরের সঙ্গীদের আঞ্চলিক বিশেষ সম্মেলন।
>> শবগুজারি— তাবলিগের মারকাজে (আল্লাহর রাস্তায়) রাতযাপন।
>> নুসরত— সাহায্য করা (বহিরাগত জামাতের কাজে সহযোগিতা করা)।
>> উসুল— আদায় করা (তাবলিগি সফরের জন্য কাউকে বের করে আনা)।
>> খুরুজ— তাবলিগের কাজে বের হওয়া।
>> মোজাকারা— পরস্পর আলোচনা।
>> তাকাজা— দ্বিনের বিভিন্ন প্রয়োজনে নিজের জান, মাল ও সময় ব্যয় করে ওই প্রয়োজন পূরণ করা।
>> হজরতজি কোনো সম্মানিত ব্যক্তিকে ভক্তিভরে এ নামে ডাকা হয়। তবে তাবলিগের পরিভাষায় তাবলিগের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস রহ., ইউসুফ রহ. ও হজরত এনামুল হাসান রহ. এই তিনজনকে হজরতজি নামে ডাকা হয়।
এনটি