মহানবী সা.-এর দাড়ি যেমন ছিল
পরিণত বয়সে দাড়ি পুরুষের সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। নারীদের মাথার চুল কেটে ফেলা যেমন সৌন্দর্যহানি ঘটায়, ঠিক তেমনি দাড়ি কেটে ফেললেও তা পুরুষের সৌন্দর্য নষ্ট করে।
ইসলামি শরীয়তের বিধান ও ফুকাহায়ে কেরামের মতামত অনুযায়ী মুসলিম পুরুষদের মুখে এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ওয়াজিব। কোনো শরয়ী কারণ ছাড়া দাড়ি না রাখা বা কাটা হারাম। ইচ্ছা করে দাড়ি না রাখলে বা কেটে ফেলা ব্যক্তি ইসলামের দৃষ্টিতে ফাসেক বলা হয়।
বিজ্ঞাপন
আর দাড়ি ছেঁটে এক মুষ্টির কম করে রাখা ‘মাকরূহে তাহরীমী’। এটি আলেমদের সর্বজন স্বীকৃত একটি মাসআলা। (দাড়ি ও আম্বিয়ায়ে কেরামের সুন্নাত, ৩১)
হাদীস শরীফে দাড়ি সংক্রান্ত ছয়টি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। সবগুলো শব্দই দাড়ি বড় করার প্রতিনিধিত্ব করে।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাড়ি সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে এক হাদিসে হজরত জাবের ইবনে সামুরা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ‘রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাড়ি মুবারক ঘন ছিল। ‘
আরও পড়ুন
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে সাখবারা ও হজরত খাব্বাব ইবনে আরাত রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর কথোপকথনের মাধ্যমেও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাড়ি দীর্ঘ হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। (বুখারি, ১/১০৩,১০৫)
হজরত আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হজরত খাব্বাব রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে প্রশ্ন করলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহর ও আসরের নামাজে কেরাত পড়তেন কি? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, তিনি আসরের নামাজে কেরাত পড়তেন।
হজরত আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু প্রশ্ন করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের নামাজে উচ্চস্বরে কিরাত পড়তেন না। তাহলে তার কেরাত পড়ার বিষয়টি কীভাবে বোধগম্য হতো? হজরত খাব্বাব রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জবাবে বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাড়ি মুবারক নড়া-চড়ার মাধ্যমে বুঝতাম যে, তিনি কেরাত পড়ছেন। (আবু দাউদ, বজলুল মাজহুদ ২/৪৪)
এই হাদিসের মাধ্যমে এই কথা স্পষ্ট যে, দাড়ি যথেষ্ঠ পরিমাণ লম্বা হলেই তা কেরাত পড়ার সময় নড়া-চড়া করে। ছোট দাড়ি কেরাত পড়ার সময় নড়া-চড়া করার প্রশ্নই ওঠে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অজু-গোসলের সময় দাড়ি খিলাল করতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মাধ্যমেও বুঝা যায় যে, তার দাড়ি মুবারক বড় ছিল। কেননা ছোট দাড়িতে খিলাল সম্ভব নয়। আর তার প্রয়োজনও নেই। কেননা তাতে এমনিতেই পানি পৌঁছে যায়।
সাহাবায়ে কেরাম প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমলগুলো সরাসরি দেখেছেন এবং সুন্নতের ওপর যথাযথভাবে আমল করতেন। তাদের আমল থেকেও দাড়ি দীর্ঘ করার প্রমাণ পাওয়া যায়।
এনটি