প্রতীকী ছবি

মসজিদ আল্লাহ তায়ালার ঘর। প্রতিদিন পাঁচবার নামাজ পড়ার জন্য মুসলমানেরা মসজিদে আগমন করেন। মসজিদকে তাই মুসলিম সমাজের মূলকেন্দ্র বলা হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরতের প্রথম দিনই মসজিদ নির্মাণের কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন। মদিনায় হিজরতের সময় যাত্রাবিরতিকালে তিনি কুবা নামক স্থানে ইসলামের প্রথম মসজিদ নির্মাণ করেন। পরে মদিনায় পৌঁছে তিনি মসজিদ-ই-নববী স্থাপন করেন। এবং সেখান থেকেই ইসলামের জ্যোতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেন।

মসজিদ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণকারীদের মহান আল্লাহ ভীষণ পছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারাই তো আল্লাহর মসজিদের আবাদ করবে, যারা ঈমান আনে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি, সালাত কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তারা হবে সৎপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা তাওবা, আয়াত, ১৮)

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, মহান আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস, ৪৫০)

এছাড়া মসজিদ নির্মাণ এমন একটি পুণ্যময় কাজ, যার সওয়াব মৃত্যুর পরও অব্যাহত থাকে। যত দিন সেই মসজিদে আল্লাহর ইবাদত হবে, তত দিন নির্মাণকারী এর সওয়াব পেতে থাকে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সাত ধরনের আমলের প্রতিদান মৃত্যুর পর কবরেও জারি থাকে। ১. যে ব্যক্তি কাউকে দ্বিনি ইলম শিক্ষা দেবে। ২. যে নদী প্রবাহিত করতে সহযোগিতা করবে। ৩. অথবা কূপ খনন করবে। ৪. অথবা গাছ রোপণ করবে। ৫. অথবা মসজিদ নির্মাণ করবে। ৬. অথবা কোরআন বিতরণ করবে। ৭. অথবা সুসন্তান রেখে যাবে যে তার মৃত্যুর পর তার জন্য দোয়া করবে। (আল বাহরুজ জাখখার : ১৩/৪৮৪)

মসজিদ নির্মাণের পর কোনো কারণে যদি তা ভেঙে পড়ে বা মসজিদ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা স্থান্তর করা হয় তাহলে সেই জায়গার ধর্মীয় বিধান কী? অথবা মসজিদের সেই জায়গায় অন্য কোনো স্থাপনা নিমার্ণ করা যাবে কিনা?

এ বিষয়ে ইসলামি আইন ও ফেকাহ শাস্ত্রবিদেরা বলেন, কোনো স্থানকে যখন মসজিদ হিসেবে আলাদা করে দেয়া হয়, এবং তাতে জনসাধারণকে নামাজ পড়ার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, তখন সেটা শরয়ী মসজিদে রূপান্তরিত হয়ে যায়। সেই স্থানটি জমিনের নিচ থেকে নিয়ে আসমান পর্যন্ত পুরোটাই মসজিদ হয়ে যায় কিয়ামত পর্যন্ত।

সে স্থানটিকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা বা সেই জায়গায় অন্য কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা কখনোই জায়েজ হবে না। যদি কোনো কারণে মসজিদের সেই জায়গায় আর নামাজ পড়ার মতো উপযু্ক্ত পরিবেশ না থাকে অথবা সেখানে যদি নামাজ পড়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে সেই স্থানটি চারিদিকে দেয়াল দিয়ে আটকে দিতে হবে। যেন কেউ সেই স্থানের সম্মান নষ্ট না করতে পারে।

মসজিদের জায়গায় কখনো মার্কেট বা অন্য কোনো স্থাপনা নির্মাণ কখনোই জায়েজ হবে না।  এমনকি মসজিদের প্রয়োজনে টয়লেট, অজুখানা নির্মাণও জায়েজ নয়। 

(ফতোয়ায়ে শামী, ৬/৫৪৭, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, ২/৪১৪)

এনটি