হজ নিবন্ধনের দ্বিতীয় দফার সময় শেষ হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি)। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পবিত্র হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৪৩ হাজার ৫৪০ জন। এখনও ফাঁকা ৮৩ হাজার ৬৫৪ জন। শেষ দিনে আরও হাজার তিনেক নিবন্ধন করতে পারেন। সব মিলিয়ে ৮০ হাজার কোটা ফাঁকা রেখেই চলতি বছরের হজ নিবন্ধন শেষ করতে চায় ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজে যেতে ইচ্ছুকদের জন্য নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম।

তিনি বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, সৌদি আরব আমাদের আর কোনো সময় দিচ্ছে না। ইতোমধ্যে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। আর সময় বাড়ছে না।

তিনি বলেন, গত বছর সৌদি সরকার সময় দিয়েছিল তাই ৮ বার সময় বাড়ানোর সুযোগ ছিল। এবার সেই সুযোগ দিচ্ছে না। সৌদি আরব আগামীকালের মধ্যে হাজী এবং বিমানের ফ্লাইটের সংখ্যা চাচ্ছে। তাই আরও সময় বাড়ানোর সুযোগ নেই। যারা হজে যেতে চান তারা যেন বৃহস্পতিবারের মধ্যে চূড়ান্ত নিবন্ধন করেন সেই আহ্বান রইল।

হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত বছর নিবন্ধনের কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় ৮ বার সময় বাড়ানো হয়। এরপরও শেষ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি কোটা ফেরত যায়। এবার সেই কোটা আরও বেশি ফেরত যাবে এমন শষ্কায় ছিল ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিগুলো। নিবন্ধনের ভাটা দেখে সবাই হতাশ।

এখনও ফাঁকা ৮৩ হাজার ৬৫৪ জন

গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে এবারের হজ নিবন্ধন শুরু হয় এবং সময়সীমা ছিল গত ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে হজ নিবন্ধনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু নিবন্ধনের কাঙ্ক্ষিত সাড়া মিলছে না। চলতি বছরও বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত কোটা রয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। বিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় পর্যন্ত মোট নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৪৩ হাজার ৫৪০ জন। এরমধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটায় তিন হাজার ৬২৫ জন ও বেসরকারি কোটায় ৩৯ হাজার ৯১৫ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন। এখনও কোটা ফাঁকা ৮৩ হাজার ৬৫৪ জন। ফলে দ্বিতীয় দফায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা বৃদ্ধির পরও প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কোটা পূরণ হচ্ছে না।

এত সংখ্যক ফাঁকা রেখে নিবন্ধনের সময় শেষ করবেন এমন প্রশ্নে মতিউল ইসলাম বলেন, আমাদের কিছু করা নেই। কারণ সৌদি সরকার সময় বাড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে না। আপনাদের মাধ্যমে হজে যেতে ইচ্ছুকদের বলবো যারা হজ করতে যেতে চান তারা যেন বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) মধ্যেই নিবন্ধন শেষ করেন।

হজ প্যাকেজের মূল্য সাধারণ হজযাত্রীর নাগালের বাইরে হওয়ার কারণে নিবন্ধনের সাড়া মিলছে না। চলতি ২০২৪ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার দুটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা। আর বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। অপরদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুইটি প্যাকেজের মূল্য যথাক্রমে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। যদিও গত বছরের চেয়ে এ বছর সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য ১ লাখ ৪ হাজার ১৬০ টাকা কমানো হয়েছে, তবুও বর্তমান হজ প্যাকেজের মূল্যকে অনেক বেশি মনে করছেন হজে যেতে আগ্রহীরা।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আগ্রহী হজযাত্রীরা শুরুতে দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন এবং প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে প্রাথমিক নিবন্ধন করার পর ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবশ্যিকভাবে প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমার মাধ্যমে চূড়ান্ত নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।

এনএম/পিএইচ