জীবিত থাকতে নিজের কবরের জায়গা নির্ধারণ করা যাবে?
মৃত্যু থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই। প্রত্যেক জীবকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমাদের সকলকে (তোমাদের কর্মের) পুরোপুরি প্রতিদান কিয়ামতের দিনই দেওয়া হবে। অতঃপর যাকেই জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হবে ও জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হবে, সে-ই প্রকৃত অর্থে সফলকাম হবে। আর (জান্নাতের বিপরীতে) পার্থিব জীবন তো প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছুই নয়। (সূরা আল ইমরান, আয়াত, ১৮৫)
অপর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তিনি জীবনদান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান। আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোনো অভিভাবক নেই, কোনো সাহায্যকারীও নেই।’ (সূরা তাওবা, আয়াত, ১১৬)।
বিজ্ঞাপন
এক হাদিসে হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তারা বলেন- ‘(হঠাৎ মৃত্যু) পাপীর জন্য আফসোস আর মুমিনের জন্য নিষ্কৃতির কারণ।’ (মুসাননাফে ইবনে আবি শায়বা : ৩/৩৭০; বায়হাকি : ৩/৩৭৯)
মৃত্যুর পর একজন মুসলিমকে যত দ্রুত সম্ভব দাফন-কাফন করাতে হয়। এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত আলী রা.-কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘হে আলী! তিনটি জিনিসের ক্ষেত্রে বিলম্ব করবে না। ১. নামাজের যখন সময় আসবে তখন নামাজ আদায় করা থেকে দেরি করবে না। ২. মৃত ব্যক্তির জানাজা যখন উপস্থিত হবে তখন কাফন-দাফন সম্পন্ন করতে দেরি করবে না। ৩. কোন অবিবাহিতা মেয়ের জন্য যখন কোন উপযুক্ত পাত্র পাবে তখন তাকে পাত্রস্থ করা থেকে বিলম্ব করবে না।’ -(তিরমিজি ১/২০৬)
মৃত্যু পরবর্তী ধাপ কবর জীবন। অনেকেই নিজের মৃত্যু পরবর্তী বাসস্থান নিজের জীবদ্দশাতেই ঠিক করে রাখতে চান। নিজের জীবনেই কবরের জায়গা নির্ধারণ করে রাখার চেষ্টা করেন। এ ক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো-
যদি কোনো জায়গার জমি কবরস্থানের জন্য ওয়াকফ করে দেওয়া হয় তাহলে সেখানে কোনো ব্যক্তি বিশেষের কবরের জন্য জায়গা নির্ধারণ করার অনুমতি নেই। কারণ, ওয়াকফ করে দেওয়ার কারণে এই কবরস্থানের জায়গায় সাধারণ মানুষের অধিকার রয়েছে এবং তা জনসাধারণের কল্যাণের জন্য নির্ধারিত হয়ে গেছে। তবে কেউ নিজের মালিকানাধীন জায়গায় কবরের জন্য জায়গা নিধারর্ণ করে রাখতে চাইলে এতে কোনো সমস্যা নেই।
এভাবে মালিকানাধীন জমিতে কবরের জন্য জায়গা নির্ধারণের বিষয়টি কোনো হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত নয়। তবে হজরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রহ.-এর পক্ষ থেকে এমন কাজের বিষয়টি সাব্যস্ত। তিনি মৃত্যুর আগে ১০ অথবা ২০ দিনারে নিজের কবরের জন্য জায়গা কিনেছিলেন। (সিরাতে ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ, ৯৯, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৫ম খণ্ড ১৪৪, দারুল ইফতা জামিয়া উলুমে ইসলামিয়া আল্লামা ইউসুফ বানুরী টাউন)
এনটি